দু’দিন আগেই জ্বর, বুকে শ্বাসকষ্ট-সর্দি নিয়ে বাইপাসের ধারে এক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। আর এবার জানা গেল, করোনা আক্রান্ত বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়। শনিবারই তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যায়। জানা গিয়েছে, ৮০ বছরের অভিনেত্রীর শরীরে কোভিড সংক্রমণ রয়েছে। সিটি স্ক্যান করার পর তাঁর শরীরে নিউমোনিয়া সংক্রমণও ধরা পড়েছে। এই মুহূর্তে তিনি ভর্তি আছেন উডল্যান্ড হাসপাতালে।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রসূন মিত্রের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের মেডিক্যাল টিমের তত্ত্বাবধানে এখন চিকিৎসা চলছে এই প্রবীণ অভিনেত্রীর। শনিবার রাতে প্রকাশিত মেডিক্যাল বুলেটিন থেকে জানা গিয়েছে, তাঁর রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা রয়েছে ৯৬। হাইপারটেনশন ও হাই ডায়াবেটিসও রয়েছে তাঁর। যা নিয়ে খানিকটা চিন্তিত চিকিৎসকরা। আজ, রবিবার থেকেই তাঁর চিকিৎসায় রেমডিসিভির, স্টেরয়েড ব্যবহৃত হবে বলে জানা গিয়েছে।
গত শুক্রবার প্রথমে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সন্ধ্যা রায়। কিন্তু শনিবার তাঁকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসার পরে তাঁকে উডল্যান্ডে নিয়ে আসেন পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি। তবে সর্দি-জ্বর ছাড়া আর কোনও কোভিড উপসর্গ এই মুহূর্তে নেই তাঁর। আপাতত তাঁর শারীরিক অবস্থাও স্থিতিশীল।
সিনেমা জগতে তাঁর প্রবেশ ছয়ের দশকে। ‘মায়া মৃগ’, ‘পলাতক’, ‘গণদেবতা’, ‘বাঘিনী’, ‘অশনী সংকেত’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘ভ্রান্তিবিলাস’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘বাবা তারকনাথ’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন। আটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে প্রথমসারির অভিনেত্রী হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন সন্ধ্যা রায়। তরুণ মজুমদার পরিচালিত ‘গণদেবতা’ সিনেমায় অভিনয় করার জন্য পেয়েছিলেন ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড। বিএফজিএ এবং কালাকার অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন। এরপরে রাজনীতির ময়দানেও দেখা যায় তাঁকে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে মেদিনীপুরে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। এরপর ভোটে জিতে সাংসদও হন। শেষ তাঁকে সিনেমার পর্দায় দেখা গিয়েছিল ২০১৮ সালে ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’ চলচ্চিত্রে। সেখানে প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন তিনি।