ভারতে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। আর তার জেরে সংক্রমণের সব রেকর্ড ভেঙে দেশে প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে ৪ লক্ষের বেশি মানুষ। পাল্লা দিয়ে লম্বা হচ্ছে মৃত্যুমিছিলও। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, আগে থেকে কি সরকারের কাছে কোনও ইঙ্গিত ছিল না যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসতে চলেছে? একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই সংক্রমণ বৃদ্ধির ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেনি। তার ফলেই এই অবস্থা।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর জুলাই মাস থেকে দেশে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার সময় বাড়তে শুরু করেছিল। চলতি বছর ১১ ফেব্রুয়ারি আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার সময় ছিল সবথেকে বেশি, ৭১০ দিন। কিন্তু তার পর থেকেই তা কমতে শুরু করে। ২৮ ফেব্রুয়ারি ৫২২ দিন, ১৫ মার্চ ৩৪৬ দিন থেকে ৩১ মার্চ তা ১৩৯ দিনে পৌঁছয়। বর্তমানে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার সময় ৩৫.৭ দিন। এই সময় প্রতিনিয়ত কমছে।
অথচ ১ ফেরুয়ারি থেকেই সব ধরনের বিধিনিষেধ সম্পূর্ণ ভাবে তুলে নিয়েছিল কেন্দ্র। এই সময়ের মধ্যে উত্তরাখণ্ডে কুম্ভ মেলা উপলক্ষে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী জড়ো হন। বাংলা, আসাম, কেরালা, তামিলনাড়ু, পুদুচেরিতে নির্বাচন হয়েছে। ভোটের প্রচারে বিশাল জমায়েত হয়েছে। এই সব জমায়েত থেকে সংক্রমণ আরও অনেক দ্রুত ছড়িয়েছে বলেই উঠে এসেছে সমীক্ষায়। শুধু তাই নয়, ফেব্রুয়ারি মাসের পর থেকে বদল হয়েছে সংক্রমণ হারেও। ১১ ফেব্রুয়ারি দেশে সংক্রমণ হার ছিল সবথেকে কম, ১.৫৮ শতাংশ। কিন্তু তার পর থেকে এই সংক্রমণ হার ক্রমাগত বাড়ছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২৮ ফেব্রুয়ারি তা পৌঁছয় ২ শতাংশে। ১৬ মার্চ ৩ শতাংশ, ২৭ মার্চ ৫ শতাংশ হয়ে বর্তমানে সংক্রমণ হার পৌঁছেছে ২১.৫ শতাংশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, কোনও দেশে সংক্রমণ হার দু’সপ্তাহ ৫ শতাংশের নীচে থাকলে বোঝা যায় সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু ভারতে এই হার অনেক বেশি। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, ফেব্রুয়ারি মাসের পর থেকে সংক্রমণ হার ক্রমাগত বাড়তে থাকলেও তা রোখার কোনও পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি।