উনিশের লোকসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে অ্যাডভান্টেজ বিজেপি। কিন্তু একুশের বিধানসভা ভোটে সেই এগিয়ে থাকা জায়গা থেকেই সম্পূর্ণ ভরাডুবি। জলপাইগুড়ির প্রায় জেতা আসন হাতছাড়া হয়েছে বিজেপির। এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী ডাক্তার প্রদীপ কুার বর্মার কাছে হেরে গিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট সুজিত সিনহা। তাও মাত্র ৯৪১ ভোটের ব্যবধানে। আর এই শোচনীয় হারের জন্য তিনি দায়ী করেছেন দলীয় নেতৃত্বকেই। বিস্ফোরক অভিযোগের সুরে তাঁর মন্তব্য, ‘দলের একাংশ ষড়যন্ত্র করে টাকার বিনিময়ে তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। তাতেই হারতে হয়েছে মাত্র ৯৪১ ভোটে। প্রচারে দলীয় নেতৃত্বকেও পাশে পাওয়া যায়নি। নইলে জলপাইগুড়িতে বিজেপি আসলে হারেনি’। এ নিয়ে জেলা দলীয় স্তরে রীতিমতো কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। এর রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব।
উত্তরবঙ্গে যে কটি শক্ত ঘাঁটি রয়েছে গেরুয়া শিবিরের, তার মধ্যে অন্যতম এই জলপাইগুড়ি। ২০১৯এর লোকসভা ভোটের অঙ্ক বলছে, এই বিধানসভা কেন্দ্রে ৪১ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। ফলে বিধানসভা ভোটেও সহজ লড়াইয়ে জয় মিলবে বলে নিশ্চিত ছিল ‘পদ্ম’ নেতৃত্ব। কিন্তু রবিবার, ভোটের ফল প্রকাশিত হতে দেখা গেল সম্পূর্ণ উল্টো ছবি। প্রায় জেতা আসনে হাজারেরও কম ভোটে বিজেপি প্রার্থী সুজিত সিনহা পরাজিত হয়েছেন। এরপরই দলীয় নেতৃত্বের উপর হারের দায় চাপিয়েছেন প্রার্থী সুজিত সিনহা। অন্তর্ঘাত করে তাঁকে হারানো হয়েছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগে সরব তিনি। প্রাপ্ত ভোটের হিসেব দেখিয়ে তাঁর অভিযোগ, ‘শহরাঞ্চলে জনতার ভোট পেলেও, গ্রামীণ এলাকা থেকে প্রায় শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে। অথচ গ্রামীণে দলের বেশ শক্ত ঘাঁটি। এখানে এই ফলাফল একেবারেই অপ্রত্যাশিত’। আর এতেই তিনি দলীয় নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ তুলেছেন।
অবশ্য প্রার্থীর এই অভিযোগকে কার্যত মান্যতা দিয়েছেন বিজেপি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীও। তিনি জানিয়েছেন, কে বা কারা এই হারের জন্য দায়ী, তা চিহ্নিত করে জেলা থেকে রাজ্য স্তরে একটি রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। তা খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে রাজ্য নেতৃত্ব। তাতেই বোঝা যাবে, অন্তর্ঘাত নাকি অন্য কিছু – ৪১০০০ ভোটের লিডের অঙ্ক ২ বছর পর কীভাবে এতটা নেমে গিয়ে প্রার্থীর হারের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।