রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের শুরু থেকেই বাংলা তথা গোটা দেশের নজর ছিল নন্দীগ্রামের দিকে। তা-ই ছিল একুশের ভোটে সবচেয়ে হাই ভোল্টেজ কেন্দ্র। এই সূর্যোদয়ের মাটিতেই সম্মুখ সমরে নেমেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। ভোটের ফল প্রকাশের দু’দিন পরেও খবরের শিরোনামে সেই নন্দীগ্রামই। কারণ সেখানের ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ এনেছেন মমতা। পুনর্গণনার আদেশ দিলে প্রাণনাশের হুমকি! তৃণমূল নেত্রীর এই অভিযোগের পর এবার নন্দীগ্রামের রির্টানিং অফিসারের বাড়িতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করল রাজ্য সরকার। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে সরকারি নিরাপত্তা পেলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, একুশের ভোটে ফল ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। বাংলায় বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফের ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল। বুধবার যখন তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে চলেছেন মমতা, তখন নন্দীগ্রাম নিয়ে চাপানউতোর অব্যাহত। সেখানে নাটকীয় ভাবে শুভেন্দু অধিকারীকে জয়ী ঘোষণার পর ইভিএমে কারচুপির অভিযোগে ইতিমধ্যেই কমিশনে চিঠি দিয়েছে তৃণমূল। পুনর্গণনার দাবি জানানো হয়েছে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে। এদিকে নন্দীগ্রামে যিনি রিটার্নিং অফিসার ছিলেন, তিনি কিন্তু পুনর্গণনার দাবি খারিজ করে দিয়েছেন।
সোমবার নিজের ফোনে একটি এসএমএস দেখিয়ে মমতা দাবি করেন, নন্দীগ্রামের রিটার্নিং অফিসার এটি পাঠিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, ‘প্লিজ সেভ মি। আমার কাছে আত্মহত্যা ছাড়া বিকল্প নেই। প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমাকে ক্ষমা করে দিন। আমার ছোট মেয়ে রয়েছে।’ এরপর মমতা বলেন, ‘বুঝতে পারছেন কী হয়েছে! সব জায়গায় এক ফল আর একটা জায়গায় হঠাৎ ৮ হাজার ভোট হয়ে গেল জিরো। ৪ ঘণ্টা সার্ভার ডাউন করে রেখে দিয়েছিল। ৪০ মিনিট লোডশেডিং করে রেখেছিল। মেশিন পাল্টেছে। অনেক কিছু করেছে। মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে কাজ করানো হচ্ছে রিটার্নিং অফিসারকে।’
তৃণমূল নেত্রীর সাংবাদিক সম্মেলনের পর নড়চড়ে বসেছে কমিশন। তাদের নির্দেশ, ‘নন্দীগ্রামে রির্টানিং অফিসারের নিরাপত্তার বিষয়ে কড়া নজরদারি ও পর্যালোচনার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। চিকিৎসাজনিত সহায়তা ও পরামর্শও দেওয়া উচিত তাঁকে’।কমিশনের সেই নির্দেশ মেনেই মঙ্গলবার নন্দীগ্রামের রিটার্নিং অফিসারের বাড়িতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করল রাজ্য সরকার। তবে নন্দীগ্রামে পুনর্গণনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে কমিশন। এ বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠানো হয়েছে দিল্লীর তরফে।