রাজনৈতিক অশান্তির জেরে ঘরছাড়া হয়েছিলেন খাস কলকাতার মানিকতলার বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী। তবে নিচুতলার কর্মীদের ভুল শুধরে দিয়ে দেবদূতের মতো তাঁদের পাশে দাঁড়ালেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। রাজনৈতিক মতাদর্শ দূরে সরিয়ে বিরোধীদলের কর্মীদের ঘরে ফেরালেন তিনি। ফিরিয়ে দিলেন তাঁদের দোকানও।
ঘটনার সূত্রপাত ২মে। ভোটের ফলপ্রকাশের পরই রবিবার রাতে উত্তেজনা ছড়ায় মানিকতলা এলাকায়। আক্রান্ত হন বেশ কিছু বিজেপি কর্মী। ঘর ছাড়তে হয় অনেককে। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন বিশ্বনাথ সিং। জানা গিয়েছে, এই বিষয়টি কুণাল ঘোষের কানে যাওয়া পাওয়া মাত্রই তিনি যোগাযোগ করেন সাধন পাণ্ডের সঙ্গে। তাঁর সহযোগিতায় মঙ্গলবার দুপুরে মানিকতলায় পৌঁছন কুণালবাবু। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা জয় দাস। বিশ্বনাথকে ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জেনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন ওই এলাকার মহিলারা।
তাঁদের অভিযোগ, ওই যুবক ও তাঁর দলবল বেশ কিছুদিন ধরে এলাকার মহিলাদের নানাভাবে হেনস্তা করেছেন। ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন। সেই কারণেই গণরোষের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চান না কেউ। তাই প্রথমে বিশ্বনাথকে এলাকায় ফেরাতে রাজি হননি স্থানীয়রা। তবে পরে কুণাল ঘোষ তাঁদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনেন। সকলকে মিষ্টি মুখও করান তিনি। আরও কোনও অন্যায় কাজে শামিল হবেন না বলে সকলের সামনে প্রতিজ্ঞাও করেন বিশ্বনাথ।
এই বিষয়ে কুণাল ঘোষ জানান, তিনি জানতে পেরেছিলেন ওই যুবক বাড়ি ফিরতে পারছেন না। তাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। পাশাপাশি নাড্ডার বাংলা সফরকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “এখানে-ওখানে না ঘুরে নাড্ডারা তো এলাকায় গিয়ে দেখতে পারেন কেন এত জনরোষ তৈরি হয়েছে। ক্ষমতায় আসার আগেই এত ঔদ্ধত্য থাকার কারণেই এই পরিণতি ওদের।” কিন্তু হঠাৎ করে কেন উদ্ধত হয়ে উঠেছিলেন বিশ্বনাথ? কী কারণে পাড়া প্রতিবেশীদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিতে শুরু করেছিলেন? সে বিষয়ে বিস্ফোরক তথ্য দিলেন কুণাল।
তাঁর দাবি, বিশ্বনাথ জানিয়েছেন, ভোটে মানিকতলা এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর জন্য তাঁকে ও আরও বেশ কয়েকজনকে ২ হাজার টাকা করে দিয়েছিলেন সেখানকার বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে। টাকার লোভেই এলাকায় অশান্তি করেছে তাঁরা। বিশ্বনাথের কথায়, “আমার বিপদের খবর পেয়ে দলের কেউ পাশে এসে দাঁড়াননি। কিন্তু ছুটে এসেছেন কুণাল ঘোষ। ” সেই কারণে তৃণমূল নেতাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। তবে তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, বিশ্বনাথকে কোনওদিনই তাঁদের দলে ঠাঁই দেওয়া হবে না।