শান্তির বার্তা দিলেন ‘কেষ্ট’। “বদলা নয়, নয় কোনও প্রতিহিংসা। থাকতে হবে শান্তিতেই।” ভোটের ফল প্রকাশের পর দলীয় কর্মীদের এমনই নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, “যাঁরা ভোট দিয়েছেন তাঁরা তৃণমূলের। যাঁরা ভোট দেননি, তাঁরাও আমাদের লোক। সবাই মিলেমিশে পাশাপাশি থাকুন। প্রয়োজনে বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের পাশে গিয়ে দাঁড়ান।” এরই মধ্যে নিজের করা ভবিষ্যতবাণী মিলিয়ে দিয়ে অভিনন্দনের বন্যায় ভাসছেন অনুব্রত। ভোটের শুরু থেকেই তিনিই দাবি করছিলেন, ২০০-র বেশি আসনে জিতবে তৃণমূল। ভোটের ফলে তাঁর কথা অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেল। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে তিনি বলেন, “আমার নাম অনুব্রত মণ্ডল। কথা দিলে তা রাখতে জানি।” বীরভূমে এবার তৃণমূলের অভূতপূর্ব ফল হয়েছে। দুবরাজপুর বাদে জেলার দশটি আসনই তৃণমূলের দখলে। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমি দলের সৈনিক হিসেবে সেই দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র। সমস্ত কৃতিত্বই তাঁর।”
উল্লেখ্য, নির্বাচন ঘোষণার পর থেকেই অনুব্রত বলে যাচ্ছিলেন, খেলা হবে। এ নিয়ে শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক তরজাও। কিন্তু তাঁর কথার নড়চড় হয়নি। ‘খেলা হবে’ বলার জন্য তাঁকে দু-দু’বার নোটিশও দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। নিয়োগ করা হয়েছিল ছ’জন পর্যবেক্ষক। নির্বাচনের আগের দিন বিকেল থেকে ভোটের পরদিন পর্যন্ত তাঁকে করা হয়েছিল নজরবন্দি। কিন্তু তারপরেও তিনি জিতলেন ১০-১ গোলে। তিনি বলেন, “নির্বাচনের এই খেলায় কোচ ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি ওই ১১জন খেলোয়াড়ের একজন ছিলাম মাত্র। দলের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী যেমন নির্দেশ দিয়েছেন তেমনই দায়িত্ব পালন করেছি।”
এদিকে, বোলপুরের ইলামবাজার থানার ঘুড়িষা ও ধরমপুরে শতাধিক বিজেপি সমর্থক গ্রামছাড়া। বাড়ি-ঘর ভাঙা হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। এসম্পর্কে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ফজলুর রহমান বলেন, “বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলেই এই হিংসা।” পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠি বলেন, ইলামবাজারে অভিযোগ পেয়েই পাঁচজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে এই মুহূর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। কোনও হতাহতের খবর নেই। বাড়ি ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগের ঘটনা যাতে না ঘটে সকাল থেকে তা নিশ্চিত করতে তৎপর প্রশাসন।