দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে মুছে গেল বিজেপি। এটা বিজেপির নেতারা প্রত্যাশা করেননি। তিন জেলায় ৩৫টির মধ্যে সিংহভাগ আসনে জয়ী হলেন ঘাসফুলের প্রার্থীরা। এখানে প্রধানমন্ত্রী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিজেপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতারা বারেবারে এসে প্রচার করেছেন। কিন্তু ফলাফলে দেখা যাচ্ছে দুই মেদিনীপুর ও জঙ্গলমহলবাসী বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ১৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ১১টিতে জয়ী হয়েছে। গতবার হাতছাড়া হওয়া তমলুক, পাঁশকুড়া পূর্ব আসনেও জয় পেল তৃণমূল কংগ্রেস। আবার দেখা যাচ্ছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ১৫টি আসনের মধ্যে ১৩টিতে জয়ী হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ঘাটাল ও খড়্গপুর সদর বাদে সবক’টি আসনই গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসে। চমক দেখা গিয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলায়। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ঝাড়গ্রামে বিপুল জয় পেয়েছিল। কিন্তু তিন বছরের মাথায় তা ম্লান হয়ে গেল। জঙ্গলমহলে চারটি আসনেই জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এখানে তিনটি ফ্যাক্টর কাজ করেছে। এক, লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পরেও এখানকার মানুষের জীবন–জীবিকায় কোনও পরিবর্তন আসেনি। যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। দুই, আদি–নব্যের অন্তর্দ্বন্দ্বে সংগঠন কাজ করেনি। আর তিন, বাংলা এবং বাঙালি আবেগ কাজে লাগাতে পেরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ফলে শুভেন্দু অধিকারী যে দাবি করেছিলেন, ৩৫–০ করে দেবো। গোহারা হারাবো। কিন্তু যে সংগঠনের উপর শুভেন্দু ভর করে এগিয়েছিল তা ছিল ফাঁপা।
এদিকে তমলুক বিধানসভায় সৌমেন মহাপাত্র ৮১৭ ভোটে জয়ী হন। চণ্ডীপুর বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেসের তারকা প্রার্থী সোহম চক্রবর্তী প্রায় ১৩ হাজার ৬৩৫ ভোটে জয়ী হয়েছেন। নন্দকুমারের প্রার্থী সুকুমার দে ৫২১৬ ভোটে জয়ী হয়েছেন। পাঁশকুড়া পশ্চিম কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ফিরোজা বিবি ৮৯০৩ ভোটে জয়ী হয়েছেন। পাঁশকুড়া পূর্ব আসনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বিপ্লব রায়চৌধুরী ১১ হাজার ৭০০ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। খেজুরি বিধানসভায় বিজেপি প্রার্থী শান্তনু প্রামাণিক ১৭ হাজার ৮৩৯ ভোটে জয়ী হয়েছেন।