রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে ২০০-র অনেক বেশি আসন নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ‘এই জয় বাংলার মানুষের জয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে কোনও বিজয় মিছিল হবে না। কোভিডের এই বাড়বাড়ন্ত কাটলে ব্রিগেডে হবে বিজয় সমাবেশ।’ তাঁর কাছে যে এই মুহূর্তে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলাই প্রথম কাজ, তা বারবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা। আর তার জন্য তিনি গোটা তৃণমূলকে কাজে লাগাতে চান। দলের জয়ী ও পরাজিত সকল প্রার্থী নিয়েই সোমবার বৈঠক করবেন তৃণমূল নেত্রী। এদিন বিকেলের ওই ভার্চুয়াল বৈঠক থেকেই তিনি আগামী দিনের বার্তা দেবেন দলকে। এরপরই সন্ধ্যে সাতটায় প্রথামাফিক মমতা রাজভবনে যাবেন সরকার গড়ার দাবি জানাতে।
তৃণমূলের অভাবনীয় জয়ের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর লেখেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছি। কাল সন্ধ্যে সাতটায় মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে আসবেন দেখা করতে।’ সেই রাজভবন যাত্রা সরকারের গড়ার দাবি জানাতেই।
নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা, যোগী আদিত্যনাথ, শিবরাজ সিং চৌহান, বিপ্লব দেব ছাড়াও প্রায় গোটা দেশের বিজেপি নেতৃত্বকে বাংলার প্রচারে আনা হয়েঠিল। একাধিক তারকা প্রচারক এনেও বাংলায় তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্কে থাবা বসাতে পারল না বিজেপি। ভাঙা পায়েই ‘খেলা’ দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অমিত শাহ যেখানে বারবার জোরের সঙ্গে দাবি করছিলেন দু’শোর বেশি আসন নিয়ে বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় আসবে, সেখানে গেরুয়া শিবিরের ঝুলিতে এল সাকুল্যে ৭৬টি আসন। নজির গড়ে বাংলার শাসকদল ভোট পেল ৪৮ শতাংশের বেশি।
আসলে একদিকে যেমন মোদী-শাহরা, অন্যদিকে রাজ্যের ২৯৪ আসনে প্রার্থী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের ভোট প্রচারের প্রতিটি সভাতেই মমতা নিয়ম করে বলেছেন, ‘আমিই ২৯৪ কেন্দ্রের প্রার্থী। আমাকে ভোট দেবেন তো?’ তাঁর ব্যক্তিগত ভাবমূর্তিকে কাজে লাগিয়েই ফের বাংলায় ঝড় তুললেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর বিরুদ্ধে নরেন্দ্র মোদীকে যতই সামনে আনুক বিজেপি, মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা স্পষ্ট করতে পারেনি বিজেপি। অর্থাৎ, মমতার সমকক্ষ কাউকে দাঁড় করাতেই পারেনি গেরুয়া শিবির। ভোটের চূড়ান্ত ফলাফলে সেই ব্র্যান্ড মমতা এবং বিজেপির মুখের অভাবেই জয়ের ফসল ঘরে তুলল তৃণমূল।