করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে দেশে। আর তার জেরে রোজই রেকর্ড হাতে বাড়ছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুমিছিল। মারণ ভাইরাসের করাল গ্রাস থেকে মুক্তি পায়নি এ রাজ্যও। সংক্রমণ রুখতে তাই বাংলায় জারি হয়েছে আংশিক লকডাউন। তবে রাত পোহালেই বাংলার ভাগ্য নির্ধারণ। আগামী কাল, রবিবার সকাল ৮টা থেকে ২৯২টি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটগণনা শুরু হবে। প্রথমে পোস্টাল ব্যালট, তারপর ইভিএমের গণনা।
তবে করোনা সংক্রমণের মধ্যে গণনাপর্ব নির্বিঘ্নে সেরে ফেলাটাই এখন নির্বাচন কমিশনের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর জন্য বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করছে কমিশন। শুক্রবার থেকে বিভিন্ন গণনাকেন্দ্রে শুরু হয়ে গিয়েছে করোনা পরীক্ষা। সব রাজনৈতিক দলের প্রার্থী, চিফ ইলেকশন এজেন্ট এবং এজেন্টদের করোনা পরীক্ষা করতে হচ্ছে। নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়েই গণনাকেন্দ্রে যেতে হবে তাঁদের। আর তা না হলে সঙ্গে রাখতে হবে দু’বার ভ্যাকসিন নেওয়ার সার্টিফিকেট। করোনার কারণে গণনাকেন্দ্র নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করার জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যে ১০৮টি গণনাকেন্দ্রের ৭০৫টি হলে ২৯২টি বিধানসভা আসনের ভোটগণনা হবে। প্রতিটি গণনাকেন্দ্র ঘিরে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। প্রবেশপথে রাজ্য পুলিশ, তারপর থাকবে রাজ্য সশস্ত্র পুলিস। কাউন্টিং হলে ঢোকার মুখে এবং স্ট্রং রুমে থাকবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। তাঁদেরও করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। গণনার জন্য রাজ্যে ২৫৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকছে। গণনাকেন্দ্রের সামনের এলাকায় থাকবে ১৪৪ ধারা। কোভিড প্রোটোকল মেনে এবার কাউন্টিং হলে ১৪টি টেবিলের জায়গায় সাতটি টেবিল বসানো হচ্ছে।
অন্যান্যবারের তুলনায় গণনায় কিছুটা বেশি সময় লাগবে বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারণা। রাজনৈতিক দলের এজেন্টদের মধ্যে একজন অন্তর একজনের পিপিই কিট পরা বাধ্যতামূলক। আবশ্যিক রাখা হয়েছে মাস্ক পরাও। রাখতে হবে ফেসশিল্ড। প্রত্যেকটি গণনাকেন্দ্রের সঙ্গে কলকাতা ও দিল্লির নির্বাচন কমিশনের যোগাযোগ থাকবে। তবে একাধিক রিটার্নিং অফিসার ও পর্যবেক্ষক করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় উদ্বিগ্ন নির্বাচন কমিশন। বেশ কয়েকজন প্রার্থী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এমনকী মারাও গিয়েছে চারজন।