কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে বাংলাজুড়ে। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বারুইপুর পুরসভা ও গ্রামীণ এলাকাতেও। তবু হুঁশ ফিরছে না মানুষের। বাজার, রাস্তায় মাস্কবিহীন অবস্থাতেই ঘুরে বেরাচ্ছে তারা। বাধ্য হয়ে পুলিশ নেমেছে রাস্তায় ও বাজারে। অন্যদিকে, জয়নগর থানার উদ্যোগে করোনার সচেতনতায় হোর্ডিং, পোস্টারে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এলাকায়।
প্রসঙ্গত, বারুইপুরে বিধানসভা নির্বাচন শেষ হতেই হু হু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। পুরসভা সূত্রে খবর, পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭৪ ছাড়িয়েছে। গত ১০ দিনে ১৪২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আবার গত ৫ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১০২ জন। ১৫ জনের বেশি হাসপাতালে ভর্তি। মারা গিয়েছেন সাতজন। প্রতি ওয়ার্ডেই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ব্লক সূত্রে খবর, ১৯টি পঞ্চায়েত এলাকায় ১৪ দিনে আক্রান্ত প্রায় ৭০০ জন। মারা গিয়েছেন অনেকেই। মল্লিকপুর, হরিহরপুর পঞ্চায়েত এলাকায় তুলনায় বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের বেশিরভাগই বাড়িতে আছেন। এই পরিসংখ্যানই অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষের কাছে। যদিও এর মধ্যেই বারুইপুরে উড়ালপুল সংলগ্ন এলাকায় ফলের বাজার, কাছারি বাজার, পুরাতন বাজার, শাসন বাজার, হাসপাতাল সংলগ্ন বাজার, ফুলতলা, চম্পাহাটি বাজার, মল্লিকপুর স্টেশন সংলগ্ন বাজার, সূর্যপুর, কুমোরহাট বাজার, গোচরণ মোড় ঘুরলেই দেখা যাচ্ছে মাস্কবিহীন দোকানদার থেকে শুরু করে আমজনতাকে। কুলপি রোডের পাশে দোকানদারদের অনেকেরই মাস্ক থাকছে থুতনিতে নতুবা পকেটে।
সোমবার বারুইপুর থানার আই সি দেবকুমার রায় ও ট্রাফিকের ওসি সঞ্জয় কর্মকার পুলিশবাহিনী নিয়ে পুরাতন বাজার, হাসপাতাল সংলগ্ন বাজারে গিয়ে নজরদারি চালালেন। অনেক দোকানদার মাস্ক পরে না থাকায় দোকান বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। অনেকের সাইকেলের চাকার পাম্প খুলে দিয়ে শাস্তি দেওয়া হয়। বাসিন্দারা পুলিশের এই ভূমিকাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, প্রতিদিনই পুলিশের এই নজরদারি চালানো উচিত। অসচেতন মানুষকে পুলিশই পারবে বোঝাতে। যদিও রাজনৈতিক নেতাদের ফোনের এত চাপ থাকে যে পুলিশ মাস্কবিহীন কাউকে ধরলেও ছেড়ে দিতে হয়। সব রাজনৈতিক নেতাদের এই সময়ে পুলিশকে মাস্ক পরা নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা উচিত। অন্যদিকে, এদিনই জয়নগর থানার আই সি অতনু সাঁতরার উদ্যোগে করোনার মোকাবিলায় মানুষকে সচেতন করতে জয়নগর পুরসভা এলাকা সহ গ্রামীণ এলাকায়, অটোর পিছনে মাস্ক পরার, ভিড় এড়ানোর আবেদন জানিয়ে মারা হয় পোস্টার, হোর্ডিং।