টুকটাক ঝামেলা-অশান্তি ছিলই। রক্তপাতও যে হয়নি, তা নয়। তবে সবমিলিয়ে ভোটের দিনটা মোটামুটি নির্বিঘ্নেই কেটেছে বলে জানিয়েছিল এলাকার পুলিশ বাহিনী। ভাটপাড়ার মতো প্রবল উত্তেজনাপূর্ণ এলাকায় আপাত শান্তিপূর্ণ ভোট করিয়ে বেশ বাহবাও কুড়িয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ভোট মিটতেই ফের বোঝা গেল ভাটপাড়া আছে ভাটপাড়াতেই। রাজ্যের সপ্তম দফা নির্বাচনের আগে রাতভর বোমাবাজি হল অর্জুন সিংয়ের খাসতালুকে। আর তাতে বেঘোরে প্রাণ গেল এক কলেজ ছাত্রের। যদিও এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগাযোগ আছে কিনা, সেটা স্পষ্ট নয়।
অভিযোগ, রবিবার রাতে ভাটপাড়ার মুক্তারবাগান এলাকার মতিভবনে বোমাবাজি করেছে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। বোমার আঘাতে অনুরাগ সাউ নামের এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার সময় নিজের বাড়ির ছাদেই ছিলেন তিনি। বোমার আওয়াজ পেয়ে বাড়ির বাইরে বেরোন। তারপরই তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা মারা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মাত্র ১৯ বছর বয়সী অনুরাগ বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র। এই ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় যায় জগদ্দল থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। তবে সেখানে এখনও বহু পুলিশকর্মী মোতায়েন রয়েছেন। তবে, কে বা কারা এই বোমাবাজি করল, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ আছে, নাকি ব্যক্তিগত আক্রোশ সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে, প্রাথমিকভাবে এই ঘটনাকে ভোট পরবর্তী হিংসা বলেই মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ভোট মেটার পর এটা ভাটপাড়ায় দ্বিতীয় খুনের ঘটনা। গত ২৩ এপ্রিল এক নাবালককে গুলি করে খুন করা হয় অর্জুন-গড়ে। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ভাটপাড়া থানা সংলগ্ন সেন্ট্রাল স্কুলের কাছে দাঁড়িয়েছিল রাজা চৌধুরী নামের ওই নাবালক। সে সময় বাইকে করে এসে দুই যুবক রাজার পথ আটকায়। একজন চেপে ধরে ওই নাবালকের হাত। অপরজন পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে একেবারে রাজার মাথায় গুলি করে। এরপরই বাইকে চেপে নিমেষে এলাকা ছাড়ে তারা। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে রাজা। তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেও ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়।