গোটা দেশের পাশাপাশি রাজ্যেও ক্রমশ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে করোনা ভাইরাস। যার ফলে তৃণমূল কংগ্রেস বারংবার আবেদন জানিয়েছিল শেষ তিন দফার ভোট একসঙ্গে করতে। তবে তাতে রাজি হয়নি নির্বাচন কমিশন। কমিশনের তরফে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছিল, ‘বিধিবদ্ধ কারণে’ এমনটা করা সম্ভব নয়। এ বার কমিশনের চিঠিকে হাতিয়ার করেই পাল্টা তিনটি যুক্তি খাড়া করে শেষ দুই দফার ভোট একসঙ্গে করার আবেদন জানিয়ে ফের একবার চিঠি পাঠাল রাজ্যের শাসকদল। করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের কথা মাথায় রেখেই পুনরায় কমিশনের কাছে এই আবেদন জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন।
গতকাল কমিশন নিজের চিঠিতে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেছিল, এ বার ভোট প্রক্রিয়ার সময় কমিয়ে ৬৬ দিনে নিয়ে আসা হয়েছে, যা গতবারের থেকে ১১ দিন কম। কিন্তু, গতবার যে বিশ্বব্যাপী কোনও অতিমারি ছিল না, আজকের পাল্টা চিঠিতে সেটাই মনে করিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। সুতরাং গত বিধানসভা ভোটের সঙ্গে এ বারের ভোটের কোনও তুলনা চলে না। বিরোধী দলের দিকে আঙুল তুলে বলা হয়েছে, অনেকেই কোভিড প্রটোকল অনুসরণ না করে এখনও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বড় জনসভা করছে।
দ্বিতীয় যুক্তি দিয়ে বলা হয়েছে, নির্বাচন এত দীর্ঘ সময় ধরে চলার কারণে কোভিডের বর্তমান পরিস্থিতিতে যা যা পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন, তার অনেক কিছুই করা যাচ্ছে না। তামিলনাড়ু-সহ একাধিক রাজ্যের ক্ষেত্রেই যখন এক থেকে সর্বাধিক তিন দফায় ভোট হচ্ছে, সেখানে রাজ্যে আট দফার ভোট করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটা বাড়িয়ে দিচ্ছে। যে সময় নির্বাচন ঘোষণা হয়েছিল, তখনকার পরিস্থিতি এতটা গুরুতর ছিল না। সেই কারণে বর্তমান অবস্থার কথা মাথায় রেখে যাতে জরুরি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়, আজ শাসকদলের তরফে সেই আবেদনও জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি কমিশনের যুক্তিকে পাল্টা ছুড়ে দিয়ে বলা হয়েছে, ‘অভাবনীয় জনস্বাস্থ্য সঙ্কটের’ কথা ভেবে যখন প্রচারের সময়সীমা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, তখন একই কারণে কেন শেষ দু’টি দফার ভোট একসঙ্গে আয়োজন করা হবে না! এমনই প্রশ্ন তোলা হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। প্রসঙ্গত, এর আগে তিন দফার ভোট একসঙ্গে করার দাবি জানিয়ে আগে দু’বার দাবি জানিয়েছিল তৃণমূল। এই নিয়ে তৃতীয়বার চিঠি দেওয়া হল।