দেশে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। আর তার জেরে নিজেই নিজের রেকর্ড ভাঙছে এই মারণ ভাইরাস। প্রতিদিন ঝড়ের গতিতে বাড়ছে দেশের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় নতুন নজির গড়েছে ভারত। এই পরিস্থিতি দেখে এবার কেন্দ্রের ‘অপরিকল্পিত’ করোনা নীতির জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে তুলোধনা করলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। বললেন, ‘কীভাবে জীবন বাঁচবে মানুষের সামনে এসে তার হদিশ দিক মোদী।’
প্রসঙ্গত, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল দেশ। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিন লক্ষ ছুঁই ছুঁই। ভ্যাকসিন থেকে অক্সিজেন, এমনকী রোগীদের চিকিৎসার শয্যা পেতেই নাজেহাল অবস্থা। যদিও প্রধানমন্ত্রী মোদীর পরামর্শ, মানুষকে সচেতন হতে হবে, লকডাউনকে শেষ হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতে হবে। আপাতত ছোট ছোট কনটেনমেন্ট অঞ্চল গড়ে সংক্রমণ রোধের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আর এতেই কেন্দ্রের ভূমিকাকে দায়সাড়া বলে মনে করেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তাঁর দাবি, ‘করোনার হু হু করে ছড়াচ্ছে। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী প্রচার সভা করে চলেছেন। সেখানে হাঁসছেন, উপহাস করছেন। এর বদলে মানুষের কাছে এসে কথা বলা প্রয়োজন। জানানো দরকার কীভাবে মানুষের জীবন রক্ষা পাবে।’
অক্সিজেনের অপ্রতুলতা নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ অক্সিজেন উৎপাদনকারী দেশ ভারত। তাহলে কেন এখানে অক্সিজেনের অভাব দেখা দিচ্ছে। করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ মাঝে প্রায় ৭-৮ মাসের ব্যবধান ছিল। দ্বিতীয় ঢেউ যে ভয়াবহ হবে কেন্দ্রীয় সরকারের সেরো সার্ভেতেই তার ইঙ্গিত ছিল। তাও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়নি। তাই আজ এই অবস্থা।’ কংগ্রেস নেত্রীর আরও দাবি, ‘দৈনিক মাত্র দু’হাজার ট্রাকে অক্সিজেন ভারতের নানা প্রান্তে পৌঁছচ্ছে। কিন্তু যেখানে দরকার অনেরক সময়ই সেখানে যাচ্ছে না। বিগত ৬ মাসে ১.১ মিলয়ান রেমডেসিভির বিদেশে রফতানি করা হয়েছে। ফলে এখন ভ্যাকসিন অমিল।’ কেন্দ্রের করোনা নীতির ভুলেই এই দুর্বিসহ পরিণতি বলে দাবি প্রিয়াঙ্কার।
মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে রোগীর শয্যা, অক্সিজেন, ওষুধ সবই প্রয়োজনের তুলনায় প্রচুর কম। এই অবস্থাতেও প্রচার চালাচ্ছেন মোদী সহ বিজেপি নেতৃত্ব। সভায় ভিড় হচ্ছে। যা মহামারীর আশঙ্কা আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেত্রী বলেছেন, ‘এখনও সভা করছেন, হাসছেন, কটাক্ষ করছেন। আর করোনা আক্রান্তদের বেশিরভাগ হাহাকার করছেন। এটা কীভাবে সম্ভব?’ বেসরকারি ল্যাবে করোনা পরীক্ষার ঢিলেমি ও সার্বিকভাবে কম নমুনা পরীক্ষা নিয়েও সরব প্রিয়াঙ্কা। তাঁর প্রশ্ন, ‘মানুষের জীবন, নাকি ভোটে জেতা, কোনটা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বেশি প্রয়োজনীয়?’