ফের বিতর্কে গেরুয়াশিবির। ভোট শেষে ইভিএম নিয়ে যাওয়ার গাড়িতে বাহিনীর সঙ্গেই দেখা গেল বিজেপি এজেন্টকে। এই অভিযোগ ঘিরে শনিবার রাত থেকেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জলপাইগুড়ি শহর। তৃণমূলের অভিযোগ, ইভিএম লুট করার জন্যই গেরুয়া শিবিরের তিন এজেন্ট গাড়িতে উঠে পড়েছিলেন। জল গড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত। জলপাইগুড়ি বিধানসভার রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ের এ ঘটনার রেশ ছিল রবিবারও।
তৃণমূলের অভিযোগ,শনিবার ভোট শেষে ইভিএম নিয়ে যখন কেন্দ্রীয় বাহিনী ডিসিআরসির দিকে রওনা হয়, সেসময় বিজেপির চারজন এজেন্ট কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে একই গাড়িতে উঠে পড়ে। ইভিএমে গরমিল করার জন্যই ওই গাড়িতে উঠেছিলেন বিজেপির এজেন্টরা। যদিও বিজেপির পাল্টা দাবি, ভোট শেষ হওয়া পর অশান্তি শুরু করে তৃণমূল। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে জানানো হয়েছে, গোটা বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে তারা। কোতোয়ালি থানাতেও অভিযোগ দায়ের করেছে। উল্টোদিকে বিজেপিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে।
এপ্রসঙ্গে কোতোয়ালি থানা সূত্রে খবর, শনিবার রাতে তাদের কাছে খবর আসে, জলপাইগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের গান্ধী মোড়ের কাছে একটি ভোটকেন্দ্রের সামনে জমায়েত হয়ে কিছু মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। এরপরই সেখানে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশকর্তারা আসতেই পরিস্থিতি শান্ত হয়। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদবও ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ জমায়েত হওয়া লোকজনকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের ডিএসপি (হেড কোয়ার্টার) সমীর পাল বলেন, অভিযোগ জমা পড়েছে। আমরা দু’পক্ষেরই অভিযোগ খতিয়ে দেখছি।
জলপাইগুড়ি জেলার যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় জানান, “জলপাইগুড়ি বিধানসভার অন্তর্গত ভোটকেন্দ্র রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ের ১০৬, ১০৭, ১০৮, ১০৯—এই চারটি বুথে ভোট শেষ হওয়ার পর বিজেপির পোলিং এজেন্টরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাড়িতে উঠে পড়ে। ভোট লুট হওয়ার আশঙ্কায় আমরা খবর পাওয়ামাত্র সেখানে যাই। আসলে বিজেপি ভোট লুট করতে চেয়েছিল। আমাদের কর্মীরা সতর্ক থাকায় বাধা দিয়েছেন। না হলে ওরা ইভিএমে কারসাজি করে ভোট লুট করত। জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে রাতেই আমরা এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। গান্ধী মোড়ে আমাদের দলের লোকজন জমায়েত করে প্রতিবাদও জানান। আমাদের প্রশ্ন, ভোট শেষে কী করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাড়িতে বিজেপির এজেন্টরা উঠল? এটা তো বেআইনি কাজ। আমরা এর প্রতিবাদ করেছি। আমাদের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধেও। রাতে আমরা এ ব্যাপারে প্রতিবাদ জানালে পুলিশ আমাদের কথায় কান না দিয়ে উল্টে আমাদের কর্মীদের উপর লাঠিচার্জ করে। তাতে আমাদের বেশ কয়েকজন মহিলা কর্মী জখম হন। আমরা বিষয়টি কোতোয়ালি থানাতেও লিখিতভাবে জানিয়েছি। শেষ পর্যন্ত পুলিশ ও কমিশন কী পদক্ষেপ নেয়, সেদিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি।”