গত ২৭ মার্চ থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। দেখতে দেখতে ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে ৪ দফার ভোট। আর রাত পোহালেই আগামীকাল পঞ্চম দফার নির্বাচন বাংলায়। ভোটপঞ্চমী কলেবরে আগের চার দফার তুলনায় বড়। কারণ নির্বাচন হবে ৬ জেলার ৪৫টি আসনে। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে এই দফাগুলিতে পায়ের তলায় মাটিই ছিল না বিজেপির। তৃণমূল শক্তি প্রমাণ করতে পেরেছিল ভাল ভাবেই। কিন্তু ক্রমেই লোকসভায় হাওয়া বদলেছে। এই ৪৫টি বিধানসভা কেন্দ্রের ২২টিতে ২০১৯ লোকসভায় এগিয়ে গিয়েছিল বিজেপি। তবে পর্যবেক্ষকদের মত, এবারের পরিস্থিতি আলাদা, ভোটের শর্তাশর্তও বদলেছে। জোরদার টক্করেরই ইঙ্গিত দিচ্ছেন তাঁরা।
যদি ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকেই সামনে রাখা যায় কবে এই ৪৫টি আসনের ৩২টিতে জিতেছিল তৃণমূল। সিপিএম-কংগ্রেস জোটের জয় হয় ৫ আসনে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার জয় হয় পাহাড়ের ৩ আসনে। কিন্তু উনিশের লোকসভায় জলপাইগুড়ি জেলায় মোট ৭ আসনের ছটিতেই জেতে বিজেপি। তৃণমূল ধরে রাখতে পেরেছিল রাজগঞ্জ। এবার লোকসভা ভোটের সেই সমীকরণ বদলাবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, জলপাইগুড়ি সদর, ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি, রাজগঞ্জে মরিয়া লড়াই দেবে দুই যুযুধান পক্ষই। এখানে বামেরা লড়াইয়ে নেই বললেই চলে। অন্য দিকে পাহাড়ে দুই শিবিরই কার্যত বিজেপির উপর চটে। রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানে বিজেপি কোনও পদক্ষেপ না করায়, কার্যত ক্ষুণ্ন তারা। তাই সেখানে বিজেপির পালে হাওয়া নেই বললেই চলে।
পঞ্চম দফায় ভোট হবে উত্তর চব্বিশ পরগণার এক বিস্তীর্ণ অংশ। এই অঞ্চলে ২০১৬ সালে বিজেপি দাঁত ফোটাতেও পারেনি। এমনকি লোকসভা ভোটের বিজেপি ঝড়েও অক্ষতই থেকেছে এই দুর্গ। তাই দক্ষিণ ২৪ পরগণার মতো উত্তর ২৪ পরগণাতেও অনেকটাই স্বস্তিতে তৃণমূল। আগামীকাল ভোট রয়েছে নদীয়া জেলাতেও। এই জেলার আটটি কেন্দ্রের পাঁচটিতে ২০১৬ সালে জয় ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল। যদিও আটটি কেন্দ্রেই লোকসভা ভোটে লিড পেয়েছে বিজেপি। তৃণমূল যদি নদীয়া পুনর্দখল করতে পারে তবে রাজ্যের ভোটসমীকরণ আমূল বদলে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। আবার, পূর্ব বর্ধমানে বিধানসভা তো বটেই, শেষ লোকসভাতেও বিজেপি দাঁত ফোটাতে পারেনি। আটটি আসনের সাতটিতেই জেতে তৃণমূল। ফলে এবারও সেগুলি তৃণমূলের দখলেই থাকবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এর পাশাপাশি উত্তরবঙ্গে রাজগঞ্জের মতো আসন যদি মেলে তবে তা শাসক দলের কাছে হবে ডিভিডেন্ট।