দেশে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। আর তার জেরে রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দৈনিক সংক্রমণ। ইতিমধ্যেই তা ২ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। সংক্রমণ রুখতে এখন বারবারই জমায়েতে রাশ টানার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু এহেন পরিস্থিতিতেই উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে চলছে কুম্ভমেলা। আর সেই শাহি স্নানে বাড়ছে উদ্বেগ। ইতিমধ্যেই কুম্ভ মেলা চত্বরে হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। শুধু মেলা চত্বরেই নয়, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে গোটা হরিদ্বারেই। এবার আরও বেশ কয়েকজন সন্ন্যাসীর শরীরে কোভিডের লক্ষণ দেখা দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ফলে বৃহস্পতিবার কুম্ভমেলা ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিরঞ্জনি আখড়া ও তপোনিধি শ্রী আনন্দ আখড়া।
জানা গিয়েছে, আগামীকাল অর্থাৎ এপ্রিলের ১৭ তারিখ কুম্ভমেলা প্রাঙ্গণ ত্যাগ করবেন ওই দুই আখড়ার সন্ত ও অনুগামীরা। পিটিআইকে নিরঞ্জনি আখড়ার সেক্রেটারি রবীন্দ্র পুরি বলেন, ‘মেষ সংক্রান্তি উপলক্ষে অপ্রিলের ১৪ তারিখ প্রধান শাহী স্নান শেষ হয়ে গিয়েছে। আমাদের বেশ কয়েকজন সন্ন্যাসীর শরীরে করোনা সংক্রমণের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তাই আমাদের জন্য এবারের মতো কুম্ভমেলা শেষ।’ এদিকে, অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদের সভাপতি নরেন্দ্র গিরি মহারাজও করোনা আক্রান্ত হয়ে আপাতত এইমসে চিকিৎসাধীন। গত এপ্রিল মাসের ১৩ তারিখ মধ্যপ্রদেশের মহা নির্বাণী আখড়ার মহামণ্ডলেশ্বর স্বামী কপিল দেবের করোনাত মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে সন্তদের মধ্যেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের কুম্ভে এখনও অবধি প্রায় ২৩ লক্ষ পুণ্যার্থী এসেছেন বলে জানিয়েছে উত্তরাখণ্ড প্রশাসন। কোভিড সংক্রমণ চলাকালীন এ ভাবে মেলার আয়োজন করা যায় কি না, সেই বিষয়ে অনেক মতবিরোধ ছিল। মেলা বন্ধের দাবি জানিয়েছিলেন অনেকে। তবে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তীর্থ সিংহ রাওয়াত সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘মানুষের স্বাস্থ্য অবশ্যই গুরুত্ব পাবে। তাই বলে ধর্মকে অবহেলা করতে পারব না।’ উত্তরাখণ্ড সরকার এ-ও জানায় যে, সব নিয়ম মেনেই কুম্ভের আয়োজন করা হবে। অবশ্য মেলার ছবি অন্য কথা বলছে। বেশিরভাগ পুণ্যার্থীকেই দেখা যাচ্ছে মাস্ক ছাড়া। সেই সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বিধি শিকেয় উঠেছে।