গোটা দেশ জুড়ে গত কয়েক সপ্তাহ তুমুল গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে করোনা সংক্রমণ। ভোটের আবহে ফুটতে থাকা বাংলাও রক্ষা পায়নি। আর এই অবস্থায় রেলকর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ ক্রমশ বাড়তে থাকায় লোকাল ট্রেন বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে রেল। হাওড়া ডিভিশনে ১৬ জোড়া লোকাল ট্রেন বাতিল করা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে এই ট্রেন বাতিলের মূল কারণ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ওই ডিভিশনের একাধিক গার্ড।
প্রায় একই পরিস্থিতি শিয়ালদহ ডিভিশনেও। ৩০ জন চালক ও দশজন গার্ড আক্রান্ত ওই ডিভিশনে। শিয়ালদহের ডিআরএম এস পি সিং বলেন, বুধবার ছুটির দিন ছিল। তাই ট্রেন কম চলেছে। এই ডিভিশনেও আগামী এক দু’দিনের মধ্যে পাঁচ-ছ’জোড়া ট্রেন বাতিল করা হবে। চারশোর কিছু বেশি চালক রয়েছে। ফলে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর ছাড়া আমাদের হাতে অন্য কোনও পথ নেই।
হাওড়ার ডিআরএম সুমিত নারুলা জানিয়েছেন, ডিভিশনের ২৫০ জন গার্ডের মধ্যে ৩১ জনই করোনা আক্রান্ত। যার মধ্যে হাওড়ার ১৩ জন, বর্ধমানের ২ জন ও ১৬ জন রামপুরহাটের। হাওড়ার তিন টিকিট পরীক্ষকও কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। ট্রেন বাতিল করা হলেও যাত্রীদের অত্যাধিক অসুবিধা যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয়েছে। ১৬ জোড়া বাতিল ট্রেনের মধ্যে তিন জোড়া মেমারি লোকাল, পাঁচ জোড়া শেওড়ফুলি লোকাল, এক জোড়া করে বেলুড় মঠ, বারুইপাড়া, শ্রীরামপুর, পাণ্ডুয়া লোকাল ও দু’জোড়া করে ব্যান্ডেল ও তারকেশ্বর লোকাল বাতিল করা হয়েছে।
সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, লকডাউনের আগে হাওড়া ডিভিশনে ৪৮০টি লোকাল চলত। এই মুহূর্তে সেই সংখ্যাটা ৪১০ থেকে ৪২০টি। ফলে বাতিলের পর এখন ৩৬৮টির মতো ট্রেন চলছে। এক একজন গার্ড গড়ে রোজ তিন থেকে চারবার ট্রিপ করেন। ফলে ৩১ জন গার্ড করোনা আক্রান্তের ফলে সম্পূর্ণ পরিষেবা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় এই বাতিলের সিদ্ধান্ত বলে অপারেশন বিভাগ জানিয়েছে।
এদিকে, শুধু ট্রেন বাতিলই নয়, এর পাশাপাশি সতর্কতাও জারি করেছে রেল। আধিকারিকদের সামনাসামনি বসে বৈঠক বন্ধ করা হয়েছে। ভিজিট করাও বন্ধ রাখা হয়েছে। ট্রেন ও প্ল্যাটফর্মে সুরক্ষা সচেতনতার কথা ঘোষণা করা হচ্ছে। তবে মাস্কহীন যাত্রীদের বিরুদ্ধে আইনগত কোনও পদক্ষেপ শুরু না হাওয়ায় হাওড়া, শিয়ালদহের বিভিন্ন ট্রেন ও স্টেশনে বহু মাস্কহীন মানুষজন ঘুরছেন। রেলকর্মী থেকে কুলি, ভেন্ডার, হকারদেরও মাস্কহীন অবস্থায় দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।