দেশে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। যার জেরে রোজই আক্রান্ত হচ্ছেন দেড় লাখের বেশি মানুষ। দৈনিক মৃত্যুও পেরিয়ে গিয়েছে হাজারের গন্ডি। এই পরিস্থিতিতে যখন প্রশাসনিক দক্ষতা দেখানোর সময়, তখন চূড়ান্ত অব্যবস্থা চলছে বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে। সে রাজ্যে শ্মশান ও সমাধিক্ষেত্রের বাইরে পড়ে রয়েছে অনেক মৃতদেহ। প্রতিদিনই হু হু করে বাড়ছে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা।
পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজ্যে কোভিডে আক্রান্ত ও মৃতের যে সরকারি হিসাব পাওয়া যাচ্ছে, তার সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতি মিলছে না। ভোপালের ভাদভাদা শ্মশানের বাইরে মৃতদেহ পড়ে থাকার দৃশ্য দেখে স্থানীয় মানুষ বলছেন, ১৯৮৪ সালে গ্যাস দুর্ঘটনার পরে তাঁরা কখনও এমনটা দেখেননি
যেমন ভোপালের বাসিন্দা বি এন পাণ্ডের ভাই করোনায় মারা গিয়েছেন। তিনি মঙ্গলবার বলেন, ‘গ্যাস দুর্ঘটনার সময় আমার বয়স ছিল ন’বছর। আমি তখন শ্মশানে এমন দৃশ্য দেখেছিলাম। এদিন আমি মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে ৩০-৪০ টি মৃতদেহ শ্মশানে আসতে দেখেছি।’
শ্মশানে যত সংখ্যক মৃতদেহ আসছে, তত সংখ্যক চিতা নেই। শ্মশানের বাইরে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অ্যাম্বুলেন্স। তার মধ্যে আছে মৃতদেহ। সন্তোষ রঘুবংশী নামে ভোপালের এক বাসিন্দার শ্যালক করোনায় মারা গিয়েছেন। তিনি জানান, শ্মশানে তাঁদের তিন-চার ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল। ভোপালের ভাদভাদা শ্মশান থেকে প্রাপ্ত হিসাব অনুযায়ী সোমবার সেখানে ৩৭ জন কোভিড আক্রান্তের দেহ দাহ করা হয়। কিন্তু রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, সারা রাজ্যে করোনায় মারা গিয়েছেন ৩৭ জন।
আবার, গত পাঁচদিন ধরে রাজ্য সরকার কোভিডে মৃতের যে সংখ্যা দেখাচ্ছে, তাতে অনেকের সন্দেহ হচ্ছে। যেমন গত ৮ এপ্রিল ভোপালে কোভিড বিধি মেনে ৪১ টি দেহের সৎকার করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার বলে, ওইদিন রাজ্যে ২৭ জন কোভিডে মারা গিয়েছেন। ৯ এপ্রিল ভোপালে কোভিড বিধি মেনে ৩৫ টি দেহের সৎকার করা হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার বলেছিল, ওইদিন রাজ্যে করোনায় মারা গিয়েছেন ২৭ জন।
১০ এপ্রিল ভোপালে কোভিড বিধি মেনে ৫৬ টি দেহের সৎকার হয়েছিল। কিন্তু সরকারি হিসাব মতো সেদিন রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ছিল ২৪। ১১ এপ্রিল ভোপালে ৬৮ টি দেহ দাহ করা হয়েছিল। অথচ সরকারি হিসাব অনুযায়ী সেদিন রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ছিল ২৪। ১২ এপ্রিল ৫৯ টি দেহের সৎকার হয়েছিল। কিন্তু সরকার বলেছিল, রাজ্যে মারা গিয়েছেন ৩৭ জন।