উনিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল রাফাল ইস্যু। এবার বাংলা-সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের সময় ফের নতুন করে বিতর্কে রাফাল চুক্তি। সুপ্রিম কোর্টের ক্লিনচিটের পর যে বিতর্ক ২০১৯ সালেই ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছিল, তা-ই পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে মিডিয়াপার্ট নামে ফ্রান্সের এক সংবাদমাধ্যমের একের পর এক বিস্ফোরক দাবিতে। এর আগে ওই সংবাদমাধ্যমটি দাবি করেছিল রাফালে চুক্তিতে ভারতীয় মধ্যস্থতাকারীকে দশ লক্ষ ইউরো ‘উপহার’ দিয়েছিল ফরাসি সংস্থা দাসো। এবার তাদের আরও এক বিস্ফোরক দাবি, রাফালে চুক্তির আগে কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রকের গোপন নথি ফ্রান্সের সংস্থাটির কাছে ফাঁস করেছিলেন চুক্তির মিডলম্যান সুষেন গুপ্তা।
মিডিয়াপার্ট নামের ওই ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যমের দাবি, ফ্রান্সের সংস্থা দাসো এবং তাদের সঙ্গী সংস্থা থেল বিদেশের একাধিক অ্যাকাউন্ট এবং ভুয়ো অকেজো সংস্থার মাধ্যমে মোট ১৪৬ লক্ষ ডলার ভারতীয় মধ্যস্থতাকারী সুষেন গুপ্তাকে দিয়েছে। সিঙ্গাপুরের একাধিক অকেজো সংস্থার মাধ্যমে এই টাকা সুষেন এবং তাঁর পরিবারের কাছে পৌঁছে দিয়েছে দাসো এবং থেল। এর পরিবর্তে সুষেন গুপ্তা ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রকের গোপন তথ্য তুলে দিয়েছে দাসোর হাতে। সুষেনের দেওয়া তথ্য হাতে পাওয়ায় ভারত সরকারের সঙ্গে রাফালের দর কষাকষিতে সুবিধা পেয়েছে ফ্রান্সের সংস্থাটি।
আসলে, রাফালের দর কষাকষির ক্ষেত্রে ভারত সরকারের প্রতিনিধিরা কী অবস্থান নেবেন, এবং কতটা নমনীয় হবে, সুষেন গুপ্তা সেই তথ্য আগেই দিয়ে দেয় ফ্রান্সের সংস্থাটিতে। ফলে তাঁরা, সেইমতো এই ফাইটার জেটগুলির দাম নিজেদের পক্ষে বাড়িয়ে নেয় বলে অভিযোগ ফ্রান্সের এই সংবাদমাধ্যমটির। মিডিয়া পার্টের দাবি, তাঁদের হাতে এই গোটা কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত যাবতীয় নথি আছে। দাসো কীভাবে সুষেন গুপ্তাকে টাকা দিল, সেইসব নথিও আছে তাঁদের হাতে। মিডিয়াপার্টের এই দাবি যদি সত্যি হয় তাহলে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী এই চুক্তিতে বড়সড় দুর্নীতির যে অভিযোগ করছিলেন, তা আংশিকভাবে হলেও সত্যি প্রমাণিত হবে।