প্রবল দাবদাহ উপেক্ষা করে জোরকদমে প্রচারে নেমে পড়েছেন নানুরের তৃণমূল প্রার্থী বিধানচন্দ্র মাঝি। “এবারের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের ২৯৪টি আসনে তৃণমূলের একটি মাত্র মুখ, তিনি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমরা ওঁর প্রতিনিধি মাত্র।” প্রচারে বেরিয়ে এমনটাই বলছেন বিধানবাবু। একথা শুনেই উল্লাসে ফেটে পড়েন সমর্থকরা।
বৃহস্পতিবার কঙ্কালীতলা পঞ্চায়েতের পাথরঘাটা, গল্টিকুরী, উত্তর নারায়ণপুর, আমডহড়া, কুঁচলি, বগদৌড়া, পদ্মাবতীপুর, রাওতারা প্রভৃতি এলাকা থেকে কাতারে কাতারে মানুষ তৃণমূলের নির্বাচনী জনসভায় শামিল হয়েছিলেন। উপস্থিত ছিলেন দলের অঞ্চল সভাপতি মহম্মদ অহিতুদ্দিন ওরফে মামুন। কঙ্কালীতলা পঞ্চায়েতের আমডহড়া বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া মাঠের সভায় বিধানবাবু বলেন, “বাংলার এবারের নির্বাচনে তৃণমূলের একটামাত্র মুখ হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওঁর পক্ষে তো সব আসনে দাঁড়ানো সম্ভব নয়, তাই আমরা ওঁর প্রতিনিধি মাত্র। আমাকে আশীর্বাদের মাধ্যমে তাঁকে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত করে বাংলার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখুন। আমরা ওঁর জন্য শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করব। কারণ, এই লড়াই আমাদের সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে রক্ষার লড়াই। সারা ভারতবর্ষে তিনিই একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে মাথা তুলতে না দেওয়ার জন্য নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা উঠেপড়ে লেগেছেন। এমনকী, নির্বাচনের আগে যাতে তিনি সারা বাংলায় চষে বেড়াতে না পারেন তার জন্য ষড়যন্ত্র করে ওঁর পায়ে আঘাত করা হল। তাঁকে পর্যদুস্ত করার আপ্রাণ চেষ্টা করছে বিজেপি। বাংলার মানুষ ইভিএমে এর যোগ্য জবাব দেবেন।”
পাশাপাশি তৃণমূল সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “গত দশ বছরে বাংলায় যা কাজ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তা গত পঞ্চাশ বছরেও হয়নি। রাস্তাঘাট, পানীয় জল, এলাকায় এলাকায় বিদ্যুৎ, প্রতিটা বাড়িতে কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সবুজসাথীর সাইকেল পৌঁছে দিয়েছেন। বাংলার সাধারণ মানুষের চিকিৎসার জন্য পরিবার পিছু স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করে দিয়েছেন। ভোটে জিতলে তফসিলি জাতি-উপজাতি মহিলারা মাসে হাজার টাকা ও সাধারণ পরিবারের মহিলারা পাঁচশো টাকা করে হাতখরচ পাবেন। বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দেওয়া হবে। কিন্তু বিজেপি দল ভাঁওতা ছাড়া কিছুই দেয়নি। ভোট আসছে বলে বাংলায় ওদের দিল্লির নেতারা ডেলি প্যসেঞ্জারদের মতো ঘুরতে আসছেন। সারা বছর যাঁরা মানুষের পাশে থাকেন না, তাঁরা এখন ‘সুনার বাংলা’ গড়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। এক সময় নানুরে মানুষের ঘুম ভাঙত বোমার আওয়াজে। বাম আমলে রাজনৈতিক সংঘর্ষ লেগেই থাকত। কিন্তু দশ বছরে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের জোয়ারে নানুর এখন অনেক শান্ত। এখন আর খুন-খারাবি হয় না। এর পুরো কৃতিত্ব মুখ্যমন্ত্রী ও অনুব্রত মণ্ডলের।”