ভোটের মুখেই ফের বিতর্কের মুখে গেরুয়াশিবির। দলীয় কার্যালয়ে দাঁড়িয়ে এক ব্যক্তিকে লাথি মারছেন চন্দ্রকোনার বিজেপি প্রার্থী শিবরাম দাস। চন্দ্রকোনায় ভোটের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এই ভিডিও। ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি। গোটা ঘটনার নিন্দা করে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে তৃণমূল।
বুধবার শিবরামের ওই ভিডিও মোবাইলে দেখিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। তাতে দেখা গিয়েছে, রামজীবনপুর বিজেপি মণ্ডল কার্যালয়ে দাঁড়িয়ে এক ব্যক্তিকে লাথি মারছেন শিবরাম। সেই সঙ্গে ওই ব্যক্তির উদ্দেশে গালিগালাজও করতে শোনা যায় তাঁকে। ওই ঘটনার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি হয়ে যায়। তবে এটি কবেকার ঘটনা বা কী কারণে তিনি এমনটা করছেন, তা অবশ্য জানা যায়নি। এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিতে জেলার বিজেপি নেতৃত্ব। গোটা ঘটনা নিয়ে বিজেপিকে নিন্দা করে অজিত বলেন, “ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে বিজেপির প্রার্থী শিবরাম দাস এক ব্যক্তিকে লাথি মারছেন। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পুলিশের কাছেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।”
আগামী বৃহস্পতিবার, ১লা এপ্রিল চন্দ্রকোনায় ভোট। এই বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়েছেন শিবরাম। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে ২০১১ সালে তিনি তৃণমূলের টিকিটে বিধানসভা ভোটে দাঁড়িয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। পরবর্তী কালে চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের রামজীবনপুর পুরসভার দু’বারের চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন। তবে লোকসভা ভোটের পর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। একুশের বিধানসভা ভোটে তাঁকেই প্রার্থী করেছে বিজেপি।
প্রসঙ্গত, নেটমাধ্যমে ওই ভাইরাল ভিডিও নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন চন্দ্রকোনার তৃণমূল প্রার্থী অরূপ ধাড়াও। দলের চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের সভাপতি তথা চন্দ্রকোনা বিধানসভায় তৃণমূল প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট সুজয় পাত্রের দাবি, “শিবরাম দাস চাকরির নামে টাকা নিয়েছিল। এখন সেই চাকরি না হওয়ায় ওই ভদ্রলোক টাকা ফেরত চাইতে গিয়েছিলেন। তাঁকে বিজেপি অফিসে দাঁড়িয়েই লাথি মেরেছে এবং হুমকিও দিয়েছে শিবরাম।”
বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে ওই ব্যক্তির ভাইরাল ভিডিয়োর দু’জনের কথোপকথনে শোনা গিয়েছে। ওই ব্যক্তি শিবরামকে টাকা দিয়েছিলেন বলে ভিডিয়োতে শোনা যাচ্ছে। টাকা ফেরতের দাবি করতেই দু’জনের মধ্যে বচসার শুরু। তর্কাতর্কির মাঝেই ওই ব্যক্তিকে লাথি মেরে বসেন শিবরাম। যদিও শিবরামের দাবি, “ওই ঘটনার কোন সত্যতা নেই। তা ছাড়া, দেড় বছর আগেকার একটা ঘটনা। কাশীনাথ কর নামে ওই ব্যক্তির সঙ্গে এখনও আমার ভাল সম্পর্ক। সে দিন মদ্যপান করে চিৎকার করছিল। তাই তাঁকে পার্টি অফিস থেকে বার করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এখন ভোটের সময় তৃণমূল এটাকে নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। কিন্তু ভোটে কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না।”