বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল এখন কোনো আনকোরা ঘটনা নয়। রোজ কাগজ বা সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখলেই আঁচ পাওয়া যাচ্ছে পদ্মশিবিরের অন্তর্কলহের। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রার্থীতালিকা প্রকাশ হতে না হতেই অসন্তোষ মাথাচাড়া দিয়েছে বিজেপির অন্দরে। প্রকাশ্যে এসেছে আদি-নব্য সংঘাত। এবার রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতোই যার কোপ পড়ল জলপাইগুড়ির পদ্মশিবিরে। জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করলেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা হরি বিশ্বাস।
সোমবার জলপাইগুড়ি জেলাশাসকের অফিস থেকে বেরিয়ে হরিবাবু বলেন, “আমি নির্দল হয়ে দাঁড়াচ্ছি। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে দলের হয়ে কাজ করছি। দলের এসসি মোর্চার দায়িত্ব সামলেছি। উত্তরবঙ্গে পদ্মের চাষ আমরাই করেছি। আর এখন ছ’মাস আগে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে আসা সৌজিৎ সিংহকে দল প্রার্থী করল। এটা আমি মেনে নিতে পারছি না। আমাদের কোনও ক্ষোভ থাকত না যদি দীর্ঘদিনের বিজেপি নেতা দীপেন প্রামাণিক, তপন রায় বা চন্দন বর্মনদের মধ্যে যেকোনও একজনকে এখানে দল প্রার্থী করত। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমি এই কেন্দ্রে দাঁড়ালাম। আমি আশাবাদী, এখানকার ভোটাররা আমাকেই জয়ী করবেন।”
পাশাপাশি, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্রে বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতা অলোক সেন নির্দল প্রার্থী হয়েই মনোনয়ন জমা করেছেন। এই তালিকায় রয়েছেন, ধূপগুড়ির বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা ভবেশ চন্দ্র রায়ও। বিজেপি সূত্রে খবর, মাল ও নাগরাকাটা বিধানসভাতেও আদি বিজেপি থেকে নির্দল প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়া হবে। বিক্ষুব্ধ নেতাদের বক্তব্য, সদ্য তৃণমূল ও অন্যদল থেকে আসা নেতাদের টিকিট দিয়ে যে ভুল হয়েছে সেটা ভোটের পর বিজেপির শীর্ষ নেতারা বুঝতে পারবেন। এ বিষয়ে কথা বলতে জেলা বিজেপির সভাপতি বাপি গোস্বামীকে একাধিকবার টেলিফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি দীপেন প্রামাণিক বলেন, “দলের একাংশ রাজ্য নেতৃত্বের কাছে আমাকে প্রার্থী করার দাবি করেছে কি না বলতে পারছি না, খোঁজ নিয়ে দেখব।” প্রার্থী সৌজিৎবাবু বলেন, “দল আমাকে প্রার্থী করেছে তাই প্রচার করছি।” স্বভাবতই ভোটের আগে এমন ঘটনা অস্বস্তি বাড়াচ্ছে গেরুয়াশিবিরে।