গত ১০ই মার্চ নন্দীগ্রামে আহত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চক্রান্তের অভিযোগ একেবার দুর্ঘটনার মুহূর্তেই করেছিলেন। বলেছিলেন, ৪-৫ জন মিলে ঠেলে দিয়েছে। সোমবার নন্দীগ্রামে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী শুভেন্দু অধিকারীর দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, “ভোটের সময় তুই আমার পা জখম করিয়েছিস।” সেই সঙ্গে মমতা বলেন, “আমি চেপে গেছি ভদ্রতা করে। আজও আমায় পা ভাঙা নিয়ে হুইলচেয়ারে বসে মিটিং করতে হচ্ছে। তোমার নির্দেশ ছাড়া এ সব হতে পারে না।” চক্রান্ত করে তাঁর পায়ে আঘাতের কথা বলে মমতা নন্দীগ্রামের মানুষকে অপমান করেছেন বলে সরব বিজেপি। কাঁথির সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গলাতেও একই কথা শোনা গিয়েছে। সোমবার তারও পাল্টা মন্তব্য করলেন মমতা। বললেন, “কোনও নন্দীগ্রামের লোক এ সব করতে পারে না। বহিরাগত গুন্ডাদের দিয়ে এ সব করিয়েছ তুমি।”
আগামী বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ নন্দীগ্রামে। বুধবার শেষ হবে প্রচার পর্ব। তার আগে একটির পর একটি কর্মসূচীতে যোগ দেন মমতা। এরই মধ্যে একটি ছিল বয়াল পঞ্চায়েত এলাকায়। সেখানেই মমতা বিরুলিয়া বাজারে পায়ে চোট পাওয়ার ক্ষেত্রে নাম না করেও স্পষ্টতই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আঙুল তুললেন। মমতা বলেন, “মনে রাখবেন মৃত বাঘের থেকেও আহত বাঘ আরও ভয়ঙ্কর।” সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, “ইলেকশনের সময় তুই আমার পা জখম করিয়েছিস।”
সোমবার গোটা বক্তৃতাতেই শুভেন্দুকে নিশানা করেন মমতা। বলেন, “আমি বাইরের মেয়ে? তুই ব্যাটা কোনও হরিদাস কাঁথির ছেলে, কী করে বেড়াস? তুই কবে নন্দীগ্রামের ছেলে হলি? তুই কী করে ভূমিপুত্র হলি? তোর তো এখানে ভূমিও নেই, জমিও নেই। তুই তো দালালি করে গেছিস। আগে সিপিএমের দালালি করেছিস, এখন বিজেপি-র দালালি করছিস। কী দিইনি তোকে?” এখানেই না থেমে মমতা বলতে থাকেন, “তোকে পরিবহণ দফতরের মন্ত্রী করেছি। তোকে পরিবেশ দফতর, সেচ দফতরের মন্ত্রী করেছি। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান করেছি। তোর বাবাকে দীঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান করেছি, তোর ভাইকে কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান করেছি।” এছাড়াও তাঁকে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান করা হয়েছে বলেও দাবি করেন মমতা। অধিকারীদের লক্ষ্য করে সোমবার আরও অভিযোগ করেন মমতা। বলেন, “কী নেই ওদের? পেট্রোল পাম্প থেকে শুরু করে লঞ্চ থেকে শুরু করে, ব্যাঙ্ক থেকে শুরু আই টি আই থেকে শুরু করে ট্রলার থেকে কী নেই?” সোমবার নন্দীগ্রামের সভা থেকে হুঁশিয়ারির সুরও শোনা যায় মমতার গলায়। তিনি বলেন, “আমরা খেলা খেলি ভদ্র ভাবে। কিন্তু আমার সঙ্গে কেউ লাগতে এসো না। আমাকে আঘাত করলে আমি আগুনের মতো ঝরে পড়ি, সিংহের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ি।”