একেই বলে উলট পুরাণ। আদি বিজেপির পক্ষ থেকেই সরাসরি মানুষের কাছে আবেদন জানানো হল, ‘এবার দিদিই থাক’। একদিকে দেওয়াল লিখন, অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়া। মূলত বীরভূম জেলায় নানা মাধ্যমে একটিই স্লোগান ছড়িয়েছে, ‘আদি বিজেপি দিচ্ছে ডাক, বঙ্গে এবার দিদিই থাক।’ আর এই প্রচার সামনে আসা মাত্র অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে অবশ্য বিজেপি যুব মোর্চার একটি ফেসবুক পোস্ট।
সকাল থেকে ‘বিজেওয়াইএম বীরভূম’ লেখা ওই ফেসবুক পেজে আদি বিজেপি কর্মীদের তরফে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁরা আবার দেখতে চান বলে আহ্বান জানানো হয়েছে। যদিও ফেসবুক পেজটি বীরভূম জেলা আইটি সেল পরিচালিত কি না, তা এখনও বিজেপির পক্ষ থেকে যাচাই করে দেখা হয়নি। তবে ওই একই ফেসবুক পেজে এর আগে লাগাতার বীরভূমের বিভিন্ন বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার করা হয়েছে। হইচই শুরু হতেই আচমকা ফেসবুক পেজ থেকে বিতর্কিত পোস্টটি তুলে নেওয়া হয়। বিজেপির যুব মোর্চার আইটি সেলের কর্মীদের কাছে এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে প্রত্যেকেই ‘জানি না’ বলে এড়িয়ে যান। এমনকী, একটি দেওয়াল লিখনের উপর আদি বিজেপির নামে যে বার্তা লেখা হয়েছিল তা কোথাকার, নাকি কম্পিউটারে সেটি বানানো, সেব্যাপারেও কেউ মুখ খুলতে চাননি।
লোকসভা ভোটে সিউড়িতে বিজেপির ভালো ফল করেছিল। সেই ফলাফলের নিরিখে এই কেন্দ্রে বিজেপির জয় নিশ্চিত বলে ধরে নিয়েছিল গেরুয়া শিবির। দলের কোনও লড়াকু নেতাকে প্রার্থী করার ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত ছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেক্ষেত্রে কালোসোনা মণ্ডল ও দুধকুমার মণ্ডলের নাম নিয়েই দলে বেশি চর্চা হচ্ছিল। কিন্তু রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্ব সংগঠনের বাইরে থেকে প্রার্থী করায় সিউড়িতে দলের অন্দরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সম্ভবত সেই ক্ষোভ ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসছে। এদিনের ফেসবুক পোস্ট তারই পরিণতি বলে অনেকে মনে করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিউড়ির এক আদি বিজেপি নেতা বলেন, ‘দলের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলতে চাই না। কিন্তু সিউড়ির প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে দলীয় নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই বলছেন, যাঁরা এতদিন সিপিএম ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করলেন, মার খেলেন, তাঁদের মধ্যে থেকে কাউকে প্রার্থী করা উচিত ছিল। কিন্তু সেটা না হওয়ায় দলীয় কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাঁদের অনেকেই প্রচারে যেতে চাইছেন না।’