অন্য দল থেকে নেতারা বিজেপিতে এসেই কার্যকর্তা হয়ে যাচ্ছে, এই অভিযোগ নতুন নয়। লোকসভা ভোটের পর থেকেই গেরুয়া শিবিরের অন্দরে এই আদি-নব্য দ্বন্দ্ব চলছে। তবে বিধানসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতেই বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। এবার যেমন গুসকরায় হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ল বিজেপির দুই গোষ্ঠী।
প্রার্থী হলেই হাতে পৌঁছবে মোটা অঙ্কের টাকা। প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে পূর্ব বর্ধমানের গুসকরার দুই বিজেপি নেতার কথোপকথনে এমন প্রতিশ্রুতি শোনা গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই কথোপকথনের একটি অডিয়ো ক্লিপিংস ভাইরাল হতেই তা নিয়ে একটি বৈঠকে ‘জবাব তলব’ করেছিলেন দলীয় কর্মীরা। আর সেই বৈঠকেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে বিজেপির দুই গোষ্ঠী। এ নিয়ে গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূল নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, গুসকরা পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিজেপির গুসকরা নগর কমিটির সভাপতি পতিতপাবন হালদারের মধ্যে একটি কথোপকথনের অডিও ক্লিপিংস ঘিরে ঘটনার সূত্রপাত। ওই ক্লিপিংসে শোনা গিয়েছে, পতিতপাবন (আউসগ্রাম বিধানসভা আসনে) প্রার্থী হলেই তাঁর হাতে ২ লাখ টাকা পৌঁছবে বলে জানাচ্ছেন নিত্যানন্দ। সেই সঙ্গে ২৫ লাখ টাকাও তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে পতিতপাবনের কাছে ‘জবাবদিহি’ করেন বিজেপি নেতা শৌভিক হেঁসের অনুগামীরা। তবে বৈঠক শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই পতিতপাবন গোষ্ঠীর লোকজনদের সঙ্গে শৌভিকের অনুগামীদের সংঘর্ষ বাধে। এই ঘটনায় বিজেপির যুব মোর্চার গুসকরা শহর কমিটির সভাপতি শৌভিক এবং নগর সম্পাদক গণেশ সরকার গুরুতর জখম হয়েছেন। অন্যদিকে, পতিতপাবনের ছেলে এবং ভাগ্নে-সহ দলের দু’পক্ষের অন্তত ৬-৭ জন আহত।
শেষমেশ পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামালায়। তবে গোটা ঘটনায় ভোটের আগেই রীতিমতো অস্বস্তিতে বিজেপি। গোটা ঘটনা নিয়ে নিত্যানন্দর দাবি, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। এই ঘটনার মধ্যেও নেই। এ বিষয়ে যা বলার পার্টি নেতৃত্ব বলবেন।’ তবে এ নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। আউসগ্রাম ১ নম্বর ব্লক সভাপতি তৃণমূলের শেখ খালিদ রহমানের মন্তব্য, ‘এরা ক্ষমতায় আসার আগেই টাকার পিছনে ছুটছে। তাহলে ক্ষমতায় এলে কী হবে, তা মানুষ বুঝতে পারছে।’