গত বছর ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরের কলেজিয়েট ময়দানে অমিত শাহের সভায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। আর সেই দিনই তাঁকে ‘গদ্দার-মিরজাফর’ বিশেষণে আক্রমণ করেছিলেন লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্যসচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার শুভেন্দুর পিতা তথা সাংসদ শিশির অধিকারী বিজেপির শরণাপন্ন হতেই তাঁকেও একই ভাষায় আক্রমণ করল শাসক দল। তৃণমূল নেতাদের কথায়, ‘গদ্দারের বাপ গদ্দারই হয়, মিরজাফরের বাপ মিরজাফরই হয়। সেটাই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।’
প্রসঙ্গত, রবিবার এগরায় বিজেপির নির্বাচনী জনসভায করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর সেই সভাতেই হাজির ছিলেন কাঁথির বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ। ডিসেম্বর মাসে শুভেন্দু দলত্যাগের পর পরই শিশিরকে সরিয়ে দেওয়া হয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে। কেড়ে নেওয়া হয় দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদও। বদলে দেওয়া হয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের উপদেষ্টার পদ। তার আগে থেকেই অবশ্য তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায় শিশিরের। তবে রবিবার তাঁর বিজেপির জনসভায় উপস্থিতির পরই সরাসরি আক্রমণের পথ নিল তৃণমূল।
নন্দীগ্রাম আন্দোলনে শিশির-শুভেন্দুর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছিলেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান। যিনি এবারের ভোটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট। একদা সতীর্থদের এহেন দলত্যাগের সিদ্ধান্তকে ছেড়ে কথা বলতে নারাজ তিনি। সুফিয়ানের কথায়, ‘ওই পরিবারটাই বেইমানদের পরিবার। ছেলে গদ্দার হলে বাপও গদ্দার হবে। ছেলেও মিরজাফর ছিল, বাবাও তাই। দলের ভেতরে থেকে ঘুণ পোকার মতো কাজ করছিল। তাই বেরিয়ে গিয়ে ভাল হয়েছে, দলে থাকলে আরও বেশি ক্ষতি করত। ওরা গিয়েছে বলে পূর্ব মেদিনীপুরে দলের সংগঠন বেঁচে গিয়েছে।’
প্রসঙ্গত, শুভেন্দুর পর তাঁর ছোট ভাই সৌমেন্দুও বিজেপি-তে গিয়েছে গত বছর ডিসেম্বরেই। শিশিরের দলবদলের পর তাঁর আরও এক সাংসদ পুত্র দিব্যেন্দু অধিকারীকে নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে। আগামী ২৪ মার্চ কাঁথিতে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে, সেই সভাতেই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নিতে পারেন দিব্যেন্দু। তাই আগেভাগেই অধিকারী পরিবারকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করা শুরু করে দিয়েছেন জেলা স্তরের তৃণমূল নেতারা।