ভোটের প্রাকমুহূর্তে ফের বিপাকে গেরুয়াশিবির।এবার সাংবাদিকদের প্রতি দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠল তারকেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী স্বপন দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে। আর এই কারণে তাঁর রাজনৈতিক কর্মসূচীর খবর প্রচার বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিলেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।
স্বপনবাবুর সাংবাদিকদের প্রতি দুর্ব্যবহারের নিন্দায় সোচ্চার হয়েছেন জোট ও তৃণমূল প্রার্থীরা। মঙ্গলবার বিকালে বিজেপি প্রার্থী স্বপন দাশগুপ্ত তারকেশ্বর পুর এলাকায় প্রচারে আসেন। স্থানীয় সাংবাদিকরা সেই সংবাদ সংগ্রহ করতে যান। তখন বিজেপির আইটি সেল এবং দলীয় কর্মীদের একাংশ সাংবাদিকদের হেনস্থা করেন। বিজেপির আরামবাগ জেলা সাংগঠনিক সহ-সভাপতি গণেশ চক্রবর্তী তারকেশ্বরের বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন। নিজে নির্দল প্রার্থী হওয়ার হুমকি দেন তিনি।
এরপর সাংবাদিকরা এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে প্রার্থীর সামনেই ধাক্কা মেরে মিডিয়ার ক্যামেরা সরিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় টিভির সাংবাদিক সুভাষ মজুমদার বলেন, “প্রার্থীর সামনেই স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন দলের আইটি সেল এবং দলীয় কর্মীদের একাংশ। সোমবার তারকেশ্বর মন্দিরে পুজো দেওয়া থেকেই শুরু হয় প্রার্থীর দুর্ব্যবহার। আইটি সেলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রয়োজন নেই। সাংবাদিকরা দিল্লী থেকেই সংবাদ সংগ্রহ করবেন। প্রতিবাদে আমরা স্থানীয় সব সাংবাদিক বিজেপির সমস্ত সভা, প্রচার কর্মসূচীর সংবাদ পরিবেশন বয়কট করেছি। প্রার্থীর পক্ষ থেকে নিঃশর্তে ক্ষমা প্রার্থনা না করা হলে তাঁর প্রচার কর্মসূচী পুরো বয়কট করা হবে।”
এবিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানার জন্য ফোনে একাধিকবার বিজেপি প্রার্থী স্বপনবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়। কিন্তু তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আরামবাগ জেলা সাংগঠনিক সহ-সভাপতি গণেশ চক্রবর্তী জানান, “ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। অহংকারী প্রার্থী আমাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেননি। তাঁর বিরুদ্ধে আমরা স্থানীয়ভাবে বিজেপির একাংশ নির্দল প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। এই বিষয়ে নিন্দায় সোচ্চার হয়েছেন তারকেশ্বরের জোট ও তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরাও। জোট প্রার্থী সুরজিৎ ঘোষ বলেন, প্রার্থী হিসেবে এই ঘটনা আমার কাছে খুবই লজ্জার। সাংবাদিকদের পেশাগত অধিকার ভুলে গিয়েছেন ওঁরা। সাধারণ মানুষই এর জবাব দেবে।”
এপ্রসঙ্গে তৃণমূল প্রার্থী রামেন্দু সিংহ রায় বলেন, “এই ধরনের ব্যবহার অত্যন্ত নিন্দনীয়। সাধারণ মানুষ শুধু নয় নিজেদের কর্মীরাও মেনে নিতে পারছেন না ওই বিজেপি প্রার্থীকে। সাংবাদিকদের প্রতি দুর্ব্যবহারেই ওঁর আসল পরিচয় প্রকাশ পেয়েছে। মানুষ সবকিছুর ওপর নজর রেখেছে। ভাঁওতা দিয়ে ভোটে জেতা যাবে না। হুগলী প্রেস ক্লাবের সম্পাদক তরুণ মুখোপাধ্যায় ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন, জনপ্রতিনিধি হতে চাওয়া একজনের পক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এরকম দুর্ব্যবহার কখনওই কাম্য নয়। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”