দুটি সভাস্থলের দূরত্ব মোটামুটি ১৪০ কিলোমিটার। একটিতে বক্তা নরেন্দ্র মোদী, অন্যটিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরুলিয়া থেকে মোদী যখন হুল বিঁধেও আরোগ্য কামনা করছেন, গড়বেতায় সভায় মমতা তখন মাপা বিশেষণে বিদ্ধ করলেন বিজেপি নেতাদের। বহিরাগত তত্ত্ব তুলে বিজেপি সম্পর্কে মমতার উক্তি, ‘ঘরের দুয়ারে সাপ, বাঘ। ওদের ঢুকতে দেওয়া যাবে না।’
মিনিট দশেক আগেই তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নরেন্দ্র মোদী। এই বার্তা দিতে অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় সদা জাগরুক মোদীর লেগেছে ৮ দিন। এই ঘটনাকে সম্পর্কের শীতলতাই বলবেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। মোদী এ দিন বলেন ,’দিদির চোট লেগেছিল যখন আমিও চিন্তা করেছি। আমারও চিন্তা হয়। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, আপনি শীঘ্রই সুস্থ হবেন। উনিও আমাদের দেশের একজন মহিলা’। মমতাও শুরু করলেন চোট প্রসঙ্গেই। জানালেন, পা এখনও সারেনি, রক্ত জমাট, ছুটে এসেছেন তবু। সেই হার না মানা আখ্যানটি এল এদিনের বক্তব্যেও। বললেন,’আমার মাথায় মারা হয়েছে। দুটো হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পেটে দুবার অপারশন হয়েছে। পা-টা আমার ঠিক ছিল। পায়ে চোট লাগার ফলে হৃদয়ে চোট লেগেছে। এখন মা বোনেদের পাই আমার পা’।
মমতার বক্তব্যে এদিন উঠে এলো তৃণমূলের সদ্য প্রকাশিত ম্যানিফেস্টোর সমস্ত ফিরিস্তিগুলিই। বারংবার বুঝিয়ে দিলেন, এবার তাঁর নজর যুব আর মহিলা ভোট। ছাত্রযুবর মন পেতে মমতার প্রতিশ্রুতি, ‘বাবা মায়ের থেকে পয়সা নিতে হবে না। ক্রেডিট কার্ডে দশ লক্ষ দেবো আমরা। এর জন্য জামিন দিতে হবে না। এই টাকাতেই ডাক্তারি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া যাবে’।১৮ বছরের ঊর্ধ্বের মহিলারা যদি বিধবা হন তবে তাকে ভাতা দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিলেন মমতা।
এবারের যুদ্ধে মমতার আরও এক তাস, রেশন। সেই প্রসঙ্গ তুলে মমতা বললেন, ‘আমাদের সরকার থাকলে বিনে পয়সায় রেশন দেওয়া হবে। নির্বাচন মিটলে এই রেশন পৌঁছবে বাড়িবাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে’। তাঁর আরও প্রতিশ্রুতি, ‘আমাদের সরকার এলে কৃষকরা দশ হাজার টাকা পাবে’। গড়বেতা মানে সুশান্ত ঘোষের রবরবা। আজ তাঁর নাম নিতেও দেখা গেল মমতাকে। বললেন, ‘সিপিএম অনেক দেখেছি৷ সুশান্ত, তপনকে দেখেছি৷ ওই পচা সিপিএম এখন পচা বিজেপি। জোচ্চুরির দলকে জব্দ করতে হলে আমাদের ভোট দেবেন’। বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘ওঁরা নির্বাচন আসলেই ক্যাশ নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। ১০০ টা ফ্লাইট ভাড়া করেছে’।