বুধবার নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আহত হওয়ার কারণে স্থগিত হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ। গত বৃহস্পতিবার দলের ইস্তেহার প্রকাশ করার কথা থাকলেও তা প্রকাশ করা যায়নি। তবে আগামীকাল নন্দীগ্রাম দিবসের দিনই সেই ইস্তেহার প্রকাশ করবে তৃণমূল। ২০০৮ সাল থেকে যে দিনটির তাৎপর্য তাদের কাছে অপরিসীম৷
২০০৭ সালের ১৪ মার্চ৷ পূর্ব মেদিনীপুরে নন্দীগ্রাম উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধে৷ তার আগে থেকেই অবশ্য উত্তেজনার পারদ চড়েছিল ওই এলাকায়৷ তৎকালীন বাম সরকারের জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি গড়ে আন্দোলন চলছিল৷ ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ পুলিশের সঙ্গে মূলত ওই ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটিরই খণ্ডযুদ্ধ হয়৷
সেদিন পুলিশের গুলিতে ১৪ জন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ৷ অনেকে নিখোঁজ হয়ে যান৷ তার পর নন্দীগ্রামের আন্দোলনকে পুঁজি করে বাংলার রাজনীতিতে তৃণমূলের শক্তিবৃদ্ধি হতে শুরু করে৷ ভোটের রাজনীতিতেও বামেদের ক্রমশ পিছনে ফেলতে শুরু করে তৃণমূল৷ সিঙ্গুরের সঙ্গে নন্দীগ্রামও ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের বাংলায় ক্ষমতায় আসতে সাহায্য করেছে৷
তাই নন্দীগ্রাম বরাবর তৃণমূলের কাছে আলাদা গুরুত্ব পায়৷ কিন্তু গত কয়েক মাসে সেই নন্দীগ্রাম আবার আলোচনার কেন্দ্রে৷ কারণ, নন্দীগ্রামে সেদিনের আন্দোলনের কৃতিত্ব কার, তা নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে৷ তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বারবার দাবি করছেন যে ওই আন্দোলনে তাঁরই কৃতিত্ব সবচেয়ে বেশি৷
অন্যদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সেদিন নন্দীগ্রামের মানুষ বাম সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলেন৷ তাই আন্দোলনে মমতার একার কৃতিত্ব রয়েছে বলে দাবি করছে তৃণমূল৷ আর সেটা প্রমাণ করতে নন্দীগ্রামে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রয়েছেন বিজেপির শুভেন্দুর অধিকারীও৷ তাই এবার ১৪ মার্চ নন্দীগ্রাম দিবসের গুরুত্ব তৃণমূলের কাছে স্বাভাবিক ভাবেই অনেক বেশি৷