বাংলায় বিজেপির সরকার গড়া নিশ্চিত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা দু’জনেই দলের সংসদীয় বৈঠকে এই মতামত ব্যক্ত করেছিলেন। তাঁদের উচ্চাকাঙ্খা থাকলেও বাস্তবের রিপোর্ট কিন্তু উল্টো কথা বলছে।
দলের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিজেপি ‘দুর্বল শক্তি’ হিসেবে রয়েছে। এই জেলাগুলি হল, কলকাতা, হাওড়া, হুগলী, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা। সাংগঠনিকভাবে এই অংশকে বিজেপি প্রেসিডেন্সি জোন হিসেবে বিবেচনা করে। এখানে ১৬টি লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে রয়েছে ১১২টি বিধানসভা আসন। যার মধ্যে কল্যাণী, হরিণঘাটা এবং চন্দ্রকোণা ভিন জেলার মধ্যে পড়ে যাওয়ায় এই তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বিজেপির নিজস্ব রিপোর্টে এই ১০৯টি বিধানসভা আসনকে ‘দুর্বলতম’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ আসন বের করতে না পারলে বঙ্গ জয়ের স্বপ্ন হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এমনই আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে দলীয় মূল্যায়নে। সেই লক্ষ্যেই কেন্দ্রের জাঁদরেল নেতা-মন্ত্রী থেকে বিজেপি শাসিত রাজ্যের মন্ত্রী ও ভোট ‘মাস্টার’ হিসেবে পরিচিত ২২ জন নেতাকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছেন অমিত শাহ। সংশ্লিষ্ট নেতাদের মধ্যেই এই ১০২টি কেন্দ্র ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
এই নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, রাধামোহন সিং, আর কে সিং, নীতিন নবীন, বিনোদ সোনকার, মঙ্গল পাণ্ডে, বিনোদ টোডি, সতীশ উপাধ্যায় প্রমুখ। কেন্দ্রীয় নেতাদের সাহায্যে রাজ্য পার্টি একটি বিশেষ দল করেছে। সেই কমিটিতে রয়েছেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের যুব মোর্চার সহ সভাপতি তাপস ঘোষ। নব্য ও পুরনোর মিশেলে ভিন রাজ্যের ভোট ম্যানেজারদের ‘প্রকৃত চিত্র’ তুলে ধরার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি।
এ প্রসঙ্গে দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, ধর্মেন্দ্র প্রধানকে উত্তর শহরতলির ন’টি বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেগুলি হল, খড়দহ, দমদম উত্তর, পানিহাটি, কামারহাটি, বরানগর, দমদম, রাজারহাট-নিউটাউন, বিধাননগর এবং রাজারহাট-গোপালপুর। ঠিক এভাবেই ২২ জন নেতাকে সুনির্দিষ্ট কেন্দ্র ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ভিন রাজ্যের ১২ জন নেতা-মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ঘুরে গিয়েছেন। আগামী ১০ দিনের মধ্যে বাকিরাও আসবেন সেই সব কেন্দ্রে, যেখানে তাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা মূলত জেলা সভাপতি থেকে মণ্ডল সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বুথ কমিটিগুলিকে আরও সচল করবেন। এমনকী ভোটের দিন প্রতিটি বুথে বিজেপির এজেন্ট থাকা সুনিশ্চিত করতে পেপটকও দেবেন তাঁরা।