বুধবার নন্দীগ্রামের বিলুরিয়া বাজারে আক্রান্ত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুষ্কৃতীদের ধাক্কায় তাঁর বাঁ পায়ের সঙ্গে মাথা এবং কপালেও চোট লেগেছে। এবার এ নিয়ে সুর চড়ানোরই সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল। গতকালই দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, ‘যারা আঘাত করেছেন মমতার উপর, তাদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। মমতা নিজেই হাসপাতাল থেকে ভিডিও বার্তায় কর্মীদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু বিজেপি যে ঘৃণ্য রাজনীতি করছে, তার জবাব দেবে বাংলার মানুষ।’
প্রসঙ্গত, দলনেত্রীর আহত হওয়ার ঘটনায় বড়সড় ‘ষড়যন্ত্র’ই দেখছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। শুক্রবার দুপুরে দিল্লীতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের দফতরে অভিযোগও জানান ৬ সাংসদের এক প্রতিনিধি দল। নির্বাচন কমিশনের কাছে বেশ কিছু প্রমাণও তাঁরা তুলে দিয়েছেন বলে দাবি। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও বিজেপির যুব মোর্চার নেতা সৌমিত্র খাঁ-র বক্তব্যকেই তৃণমূল এখন হাতিয়ার করতে চাইছে।
সাংসদ সৌগত রায় গতকালই বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্রিগেড সমাবেশে বলেছিলেন, ‘ভবানীপুর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর স্কুটার যদি নন্দীগ্রামে গিয়ে কোনও দুর্ঘটনায় পড়ে, তবে তার দায় বিজেপি নেবে না।’ মোদির সেই মন্তব্যকেও হাতিয়ার করেছে তৃণমূল। এদিনও মোদী-শাহদের সামান্য রাজনৈতিক শিষ্টাচার নেই বলেও অভিযোগ করেছেন পার্থ। বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর যে আক্রমণ করা হয়েছে, সবাই তার প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিজেপির সর্বভারতীয় সভা নাড্ডা কেউ খোঁজ নিলেন না। এটা কি ধরণের রাজনৈতিক শিষ্টাচার, বুঝতে পারছি না।’
এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় আরও অভিযোগ করেন, ‘দু’জন বড় পদাধিকারীকে সরিয়ে দিয়েছে কমিশন। নিরাপত্তায় তাই গলদ ছিল। তাই ইসি’র থেকে আমরা উত্তর চেয়েছি৷’ তিনি জানান, ‘মমতার সভা আছে সবাই জানত। তারপরেও নির্বাচন কমিশন কী দায়িত্ব পালন করেছে? সেই প্রশ্ন আমাদের বরাবর থাকবে।’ এদিকে, মমতার ঘটনাকে ‘অরাজনৈতিক’ আখ্যা দেওয়ায় নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে পার্থ বলেন, ‘নন্দীগ্রামের মানুষ, বাংলার মানুষ নিজেরাই শুভেন্দুকে জবাব দেবেন। ২০১১ সালের পর থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায় কী করেছেন, তা বাংলার মানুষ দেখেছেন। শুভেন্দু যা বলছেন, তা সুস্থ মস্তিষ্কের কেউ নয়৷ উনি অসত্য কথা বলছেন।’