রাজ্য থেকে ১০ বছর আগে বিদায় নিলেও বাম আমলের একটি রেকর্ড এখনও গোটা দেশে রাজনৈতিক চর্চার বিষয় হয়ে রয়ে গিয়েছে। দেশের ভিক্ষুকদের ভিক্ষাবৃত্তি থেকে সরিয়ে এনে অন্য কোনওভাবে পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করা যায় কি না, সেই সংক্রান্ত একটি প্রশ্ন সম্প্রতি উত্থাপিত হয়েছিল রাজ্যসভায়। বুধবার ওই প্রশ্নের উত্তরে সংসদে কেন্দ্রীয় সরকার যে লিখিত তথ্য ও বিবৃতি পেশ করেছে, সেখানে জানা যাচ্ছে, ভিক্ষুকের সংখ্যায় দেশের মধ্যে একসময় বামফ্রন্ট সরকার রেকর্ড করেছিল।
কেন্দ্রীয় সরকার গত বুধবার রাজ্যসভায় জানিয়েছে, ২০১১ সালের সরকারি তথ্য অনুযায়ী গোটা দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি ভিক্ষুক ছিল বাংলায়। ওই গণনা অনুযায়ী দেশে ছিল ৪ লক্ষেরও বেশি ভিক্ষুক। রাজ্যওয়াড়ি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভিক্ষুকের সংখ্যায় বাংলা ছিল শীর্ষস্থানে। সংখ্যা ৮১ হাজার ২৪৪ জন। রাজ্যের পরেই ভিক্ষুকের সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে উত্তরপ্রদেশ। ৬৫ হাজার ৮৩৫ জন। তৃতীয় স্থানে ছিল অন্ধ্রপ্রদেশ। সংখ্যা ৩০ হাজার ২১৮ জন। ২৯ হাজার ৭২৩ জন নিয়ে বিহারের স্থান ছিল চতুর্থ। ২০১১ সালেই হয়েছে শেষ বার জনগণনা।
এবার আবার ২০২১ সালে জনগণনা শুরু হবে। সুতরাং ১০ বছরে ভিক্ষাবৃত্তির সংখ্যায় বাংলার অবস্থান কতটা পরিবর্তন হল, সেটা জানা যাবে সেন্সাসের রিপোর্ট প্রকাশ হলে। তবে জনগণনা না হলেও ভিক্ষুকের সংখ্যা যে এই রাজ্যে অনেক কমে এসেছে, সেটা স্পষ্ট হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্রকল্পে। বিজু জনতা দলের রাজ্যসভার সদস্য প্রসন্ন আচার্য রাজ্যসভায় প্রশ্ন করেছিলেন, দেশের ভিক্ষুকদের মূলস্রোতের জীবিকায় ফিরিয়ে নিয়ে আসার কোনও সরকারি প্রকল্প রয়েছে কি না।
সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের পক্ষ থেকে রাজ্যসভায় বলা হয়েছে, এরকম কোনও সমন্বিত প্রকল্প সামগ্রিকভাবে নেই। তবে ১০টি শহরকে বাছাই করা হয়েছে। রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি পাইলট প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। দেখা যাচ্ছে সেই শহরগুলির তালিকায় এই রাজ্যের একটিও শহর নেই। দিল্লী, বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ, আহমেদাবাদ, লখনউ, পাটনা, ইন্দোর, চেন্নাই, মুম্বই এবং নাগপুরকে নিয়ে এই প্রকল্প শুরু হয়েছে জানিয়েছে সরকার। তার থেকেই পরিষ্কার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে রাজ্যে ভিক্ষুকের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে।