মঙ্গলবার বিকেল ৩টে নাগাদ নন্দীগ্রামে পৌঁছেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সন্ধ্যে ৬টা নাগাদ আহত মমতাকে নিয়ে আসা হয় কলকাতায়। ২৮ ঘণ্টা নন্দীগ্রামে ছিলেন নেত্রী। এ সময় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক, সভা, মিছিল করার পাশাপাশি ১৯টি মন্দিরে দর্শনের জন্য গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি তিনি গিয়েছিলেন একটি মাজারেও।
ভোটে বাকি হাতে গোনা মাত্র কয়েকদিন। নন্দীগ্রাম হামলার আগে পর্যন্ত প্রচারের জন্য রাজ্যের এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিগত দু’দিনে রাজ্যের একাধিক মন্দির এবং একটি মাজারে গিয়েছিলেন তিনি, সূত্রের খবর এমনটাই। এরমধ্যে ছিল পারুলের মন্দির, জানকিনাথ মন্দির, শিব মন্দির, শিবরামপুর মন্দির, চালমারী মন্দির, শিবালয় মন্দির,রানিচৌকি গিরি বাজার মন্দিরও।
এখানেই শেষ নয়। মঙ্গলবার থেকে শুরু করে বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত দেড় দিনে মোট ২০ বার ‘ফেসবুক লাইভ’ করেছেন মমতা। নেটমাধ্যমের হিসেব বলছে বুধবার বিকেল পর্যন্ত ২০ বার লাইভে এসে তিনি ৪০ লক্ষের উপর ‘ভিউজ’ পেয়েছেন। অর্থাৎ, ফেসবুকে তাঁর ওই ‘লাইভ’ দেখেছেন ৪০ লক্ষের উপর দর্শক। মমতার প্রথম ফেসবুক ‘লাইভ’ ছিল মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে কর্মিসভায়। বেলা ৩টের সময়। সেই ‘লাইভ’ ‘ভিউজ’ পায় ১০ লক্ষের উপর। নন্দীগ্রামে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন মমতা। মঙ্গলবার তার কাছাকাছি মঙ্গলবার সোনাচূড়ায় বাসুলি মন্দিরে পুজো দেন তিনি। যান তেখালির চণ্ডীমাতা মন্দিরে। পর পর তিনটি ফেসবুক ‘লাইভ’ করেন। সেখান থেকে যান নন্দীগ্রামের শহিদবেদীতে শ্রদ্ধা জানাতে। সেখানেও হয় ‘ফেসবুক লাইভ’। সেখান থেকে স্থানীয় পারুল মন্দির পরিদর্শনের পরে যান একটি মাজারে। ওই দু’জায়গা থেকেও ‘ফেসবুক লাইভ’ করেন মমতা।
সেখানেই শেষ হয়নি মমতার ‘লাইভ’ নন্দীগ্রাম সফর। অতীতে অনেকবার গৃহস্থ বাড়ির দাওয়ায় বসে চা খেতে দেখা গিয়েছে বিরোধী নেত্রী অথবা মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে। কয়েক বছর আগে প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়ে দিঘার একটি চায়ের দোকানে নিজের হাতে চা বানিয়েছিলেন। এ বার নন্দীগ্রামের প্রার্থী হওয়ার পরে সেই ভূমিকায় ফের দেখা গিয়েছে মমতাকে। নন্দীগ্রাম বাজারে চায়ের দোকানে। চা বানিয়ে গ্রামবাসীদের তা বিতরণ করেন। আবার ফেসবুক লাইভ। এর পরে জানকীনাথ মন্দির দর্শন এবং সাংবাদিক বৈঠক। দু’টি ক্ষেত্রেই দু’বার ফেসবুক লাইভ। মঙ্গলবার সেটিই ছিল মমতার দশম ফেসবুক লাইভ।
মঙ্গলবারের লাইভ পর্ব সেখানেই শেষ। এক বেলায় ১০ বার। বুধবার সকালে মমতা গিয়েছিলেন স্থানীয় একটি শিবমন্দিরে পুজো দিতে। আবার ‘লাইভ’। এর পরে হলদিয়ায় পদযাত্রা, মনোনয়ন জমা এবং সাংবাদিক বৈঠক। দফায় দফায় ‘লাইভ’। এর কোনও কোনও ‘লাইভ’-এর সময় কম হলেও বারবার ফেসবুকে বাড়তে থাকে ‘ভিউজ’-এর সংখ্যা। নন্দীগ্রামের শিবরামপুর মন্দির, চালমারি মন্দির এবংআমদাবাদ দুর্গা মন্দির দর্শনে যান মমতা। প্রতিটি জায়গাতেই ফেসবুক ‘লাইভ’। বিকেল ৫টায় ফের মমতাকে ফেসবুক ‘লাইভে’ আসতে দেখা যায় শিবালয় মন্দির থেকে। এর পরে রানিচকগিরি বাজার এলাকায়। সেটি একটি মন্দিরে। আবার ‘লাইভ’।
মনে করা হয়েছিল বুধবার সন্ধ্যা, রাত এবং বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতায় ফেরার আগে পর্যন্ত আরও কয়েকবার ‘লাইভ’ করবেন মমতা। কারণ, রাতে নন্দীগ্রামে থাকার কথা ছি তাঁর। কিন্তু সন্ধ্যায় পায়ে চোট পেয়ে কলকাতা ফিরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী।