রবিবারই রাজ্যে ব্রিগেড সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছেন, আর কোনও অন্যায় নয়, এবার ‘খেল খতম’ হতে চলেছে ‘দিদির’ দলের। কিন্তু প্রার্থী তালিকা নিয়ে খোদ মোদীর দলের অন্দরেই তৈরি হয়েছে ব্যাপক ক্ষোভ। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের চারটি আসনে গেরুয়া শিবিরের স্থানীয় নেতারা পৃথক মঞ্চ তৈরি করে ৪ আসনে ‘নিজেদের’ প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। এই কারণে ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়েছে সমন্বয় মঞ্চ।
গত বৃহস্পতিবার দিল্লীতে দলের সদর দফতরে নির্বাচনী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের রাজ্য নেতারা। সেখানেই প্রার্থীতালিকা চূড়ান্ত হয়। পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়ার মতো একাধিক জেলায় জেলা সভাপতি, জেলা কমিটি, মণ্ডল কমিটিতে যুক্তদের প্রার্থীকে প্রার্থী করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা একাধিক নেতাকেও টিকিট দেওয়া হয়েছে। আর গোল বেঁধেছে এখানেই।
বিজেপির প্রার্থীতালিকা অনুযায়ী, পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনী কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন রাজীব কুণ্ডু, গড়বেতায় মদন রুইদাস, খড়গপুর গ্রামীণে তপন ভুঁইয়া ও মেদিনীপুরে টাউনে খোদ জেলা সভাপতি শমিত দাস। আর অভিযোগ উঠেছে এই বিষয়েই। খোদ জেলা সভাপতি নিজে প্রার্থী হওয়া ছাড়াও আরও তিনটি কেন্দ্রে নিজের ‘পছন্দের’ মানুষদের টিকিট পাইয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আর সেই কারণে স্থানীয় নেতৃত্বের একটা বড় অংশ দল ছেড়ে আলাদা প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মোদীর ব্রিগেড সমাবেশের দিনই এ বিষয়ে বৈঠকে বসেছিলেন ওই নেতারা। শালবনীর জয়পুরে সেই বৈঠকের পর নেতা-কর্মী মিলে প্রায় ৫০০ জন বিজেপি ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। জানা গিয়েছে, বিক্ষুদ্ধ নেতা-কর্মীদের বৈঠকে হাজির ছিলেন বিজেপির প্রাক্তন জেলা সহ-সভাপতি প্রদীপ লোধা, হিন্দু জাগরণ মঞ্চের নেতা ঋজু কারক ও কুড়মি সমন্বয় মঞ্চের বেশ কয়েকজন নেতা। তাঁদের অভিযোগ, দল যাঁদের প্রার্থী করেছে, তাঁদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের কোনও সংযোগ নেই। তাই দল ছেড়ে পৃথক প্রার্থী দিতে চান তাঁরা।
ব্রিগেড সমাবেশে মিঠুন চক্রবর্তীকে দলে টেনে রীতিমতো চমক তৈরি করেছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। মিঠুনকে ‘বাংলার ঘরের ছেলে’ বলে সম্বোধন করেছেন মোদী। প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেছেন, বাংলায় আসল পরিবর্তন আসছেই। কিন্তু এরই মাঝে জেলাস্তরে যেভাবে প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভের সঞ্চার ঘটেছে, তাতে বিড়ম্বনা বাড়ছে গেরুয়া শিবিরের।