‘দলে থেকে কাজ করতে পারছি না’ বলে যখন তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিচ্ছেন নেতারা, তখন দলে থেকেও যোগ্য সম্মান পাচ্ছেন না বিজেপিতে যোগদান করা টলি-তারকারা। ঘর সাজাতে যেমন ফুলদানি লাগে, তেমনি দলে এনে ফুলদানির মতোই তাঁদের সাজিয়ে রেখেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির রবিবারের ব্রিগেডে একমাত্র মিঠুন চক্রবর্তী ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চে তাঁর পাশে জায়গা হল না যশ দাশগুপ্ত, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, হিরণ চট্টোপাধ্যায়, রূপাঞ্জনা মিত্র, রুদ্রনীল ঘোষ, পায়েল সরকারদের। স্রেফ ‘ফুলদানি’ হয়েই থেকে গেলেন নেতা হওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দেওয়া এই সকল অভিনেতা-অভিনেত্রীদের।
প্রসঙ্গত, গতকাল ব্রিগেড শুরু হওয়ার ঘণ্টা খানেক আগেই ময়দানে পৌঁছেও গিয়েছিলেন যশ-শ্রাবন্তী-হিরণরা। কিন্তু ওই পর্যন্তই। তার পর আর তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। মোদীর মূল মঞ্চের পাশের একটি মঞ্চে তাঁদের বসিয়ে রাখা হয়েছিল। মঞ্চসজ্জার ফুলদানির মতোই। যতদূর দেখা গিয়েছে, তাঁরা অবাক চোখে চারদিকে তাকিয়ে দেখেছেন। সভা শুরু আগে চ্যানেলের ক্যামেরার সামনে কথাবার্তা বলেছিলেন বটে। কিন্তু ব্রিগেডে পৌঁছতেই তাঁদের ওপর থেকে প্রচারের আলো সরে গিয়েছিল। কারণ, রবিবারের ব্রিগেডে তারকা ছিলেন একজনই— নরেন্দ্র মোদী।
উল্লেখ্য, ব্রিগেডে যাওয়ার আগে বাড়ি থেকে বেরনোর সময় অভিনেতা যশ জানিয়েছিলেন, এটিই তাঁর প্রথম ব্রিগেড যাত্রা। তিনি বলেন, ‘আমি খুবই উত্তেজিত। যে পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে, সেই পরিবর্তনের সাথে আমিও আছি এই জন্য আমি খুশি। যেভাবে মানুষ ব্রিগেডের দিকে ঝুঁকছে তাতে আমার মনে হয় মানুষ ঠিক করে নিয়েছে, কে তাঁদের ভালটা করতে পারে। আমি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত বিজেপি ক্ষমতায় আসছে। আমি প্রার্থী হব কি না সেটা যখন তালিকা বেরোবে তখন জানা যাবে। তবে দল যা করবে তার সঙ্গে আমি একমত।’
হিরণের জীবনেরও এটি প্রথম ব্রিগেড ছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘এর আগে বহু বছর ধরে আমি একুশে জুলাই করেছি। ব্রিগেড কখনও করিনি। এটা আমার প্রথম ব্রিগেড এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একসঙ্গে থাকা। লক্ষ লক্ষ মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা। এর জন্য একটা সৌভাগ্য দরকার। মনে হচ্ছে আমি খুবই সৌভাগ্যবান।’ অভিনেত্রী শ্রাবন্তী আবার বলছিলেন, ব্রিগেডে আসার উত্তেজনায় শনিবার রাতে তাঁর ঘুমই হয়নি। তাঁর কথায়, ‘সকাল সকাল উঠে পড়েছি। প্রথমবার প্রধানমন্ত্রীর সামনে যাব। তাঁর সঙ্গে দেখা হবে। খুবই উৎসাহিত আমি। নিশ্চয়ই চাইব ওঁর সঙ্গে কথা বলতে।’
তবে ব্রিগেডে যাওয়ার আগে যে উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছিল যশ-হিরণ-শ্রাবন্তীদের মধ্যে, ব্রিগেড শেষে তার ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি। গোটাদিন তাঁদের মূল মঞ্চের পাশে অন্য একটি মঞ্চে বসিয়ে রাখায় সকলেই কমবেশি নিরাশ হয়েছেন। যদিও বিজেপির বাবুল সুপ্রিয়, লকেট চট্টোপাধ্যায়রা তারকা হলেও তাঁরা দলে পুরনো এবং পরীক্ষিত। তাই লকেট এবং বাবুল বক্তৃতা করার সুযোগ পেয়েছেন। ছিলেন অঞ্জনা বসুও। তবে তাঁকে মূল মঞ্চের ধারেপাশে দেখা যায়নি। নতুনদের জায়গা হল মঞ্চের পাশে তাঁদেরই জন্য বাঁধা মাপে ছোট মঞ্চে।