রীতিমতো রক্তক্ষয়ী হয়ে উঠল মায়ানমার। মায়ানমারের গণতন্ত্রকে হত্যা করতে মরিয়া সে দেশের সেনা। শান্তি ফেরানোর নামে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তবে বুধবার চরম নৃশংসতার সাক্ষী থাকল আন সাং সু কি-এর দেশ। একদিনে ৩৮ গণতন্ত্রকামী মানুষকে গুলি করে মারল সেনা ও পুলিশ। সেনার বর্বরোচিত আচরণে স্তম্ভিত গোটা বিশ্ব। নিন্দায় সরব প্রত্যেকেই। উল্লেখ্য, গত ১লা ফেব্রুয়ারি আচমকাই দেশের শাসনক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় মায়ানমার সেনা। পালটা ক্যু বা সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে পথে নামে দেশের আমজনতা। কোথাও তাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তো কোথাও আবার শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছেন। কিন্তু আন সাং সু কি পন্থীদের দমনে মরিয়া সে দেশের সেনা। সেই উদ্দেশে নির্বিচারে অত্যাচার চালাচ্ছে তারা। ইতিপূর্বে একদিনে সর্বাধিক ১৭ জনের মৃত্যু খবর এসেছিল। কিন্তু এবার সেই বীভৎসতাকে ছাপিয়ে গেল বুধবারের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, শুধুমাত্র ইয়াঙ্গনেই মৃত্যু হয়েছে সাতজনের। গ্রেপ্তার হয়েছেন অন্তত ৩০০ জন। মনওয়ায় ছজনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি মৃত্যুর খবর এসেছে মান্দালয়, মিঙগিয়ান শহরগুলি থেকে। রক্ত ভেসে যাচ্ছে শহরগুলি। এ প্রসঙ্গে মায়ানমারে নিযুক্ত রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ দূত ক্রিশ্চিন স্কেরানের বারজানের জানিয়েছেন, “সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এটাই সবচেয়ে বীভৎস রক্তক্ষয়ী দিন। একদিনে ৩৮ জনের মৃত্যু হল। ইতিমধ্যে মোট মৃতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে।” রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ দূত আরও জানিয়েছেন, মায়ানামারের ডেপুটি সেনাপ্রধান সু উইনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সেনা দমন-পীড়নের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছিলেন, এখনই এই বর্বরোচিত কার্যকলাপ বন্ধ না করলে বহু দেশে মায়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। জবাবে সেনার পদস্থ কর্তা সাফ জানিয়েছে দিয়েছেন, এই ধরণের হুঁশিয়ারিতে তাঁরা অভ্যস্ত। সম্পর্ক ছিন্ন করলেও মায়ানমারের কোনও ক্ষতি হবে না। এর থেকে স্পষ্ট, মায়ানমারের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে মরিয়া সেনা। কোনওভাবেই তাঁর পিছু হঠবে না। প্রয়োজনে আরও মানুষকে হত্যা করতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।