দলে থেকে ‘মনের কথা’ বলতে পারছিলেন না! তাই ঠিক ভোটের মুখে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র (জিতেন) তিওয়ারি। মঙ্গলবার তাঁর দলত্যাগের পরেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে জিতেন্দ্রর বিধানসভা কেন্দ্র পাণ্ডবেশ্বরে। মঙ্গলবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতে হুগলির বৈদ্যবাটির একটি সভায় বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। আর বুধবার সকালেই তৃণমূলকর্মীরা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক কার্যালয় গোবরজল দিয়ে ধুয়ে ‘শুদ্ধ’ করেছেন। ওই কাজে নেতৃত্ব দিয়েছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এবং হরে রাম সিংহ।
নরেন্দ্রনাথ বলেন, ‘এই এলাকায় যত কয়লাচোর রয়েছে তারা একত্রিত হচ্ছে। এর আগে কয়লাচোর রাজু ঝা, জয়দেব খাঁ গিয়েছিল। এখন এ (জিতেন) গেল। এর ফলে তৃণমূল দলটা শুদ্ধ হচ্ছে! তাই গোবরজল দিয়ে দলের অফিস ধোয়া হয়েছে।’ উল্লেখ্য, এর আগে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার পর তাঁর বিধায়ক কার্যালয়ও এ ভাবেই ‘শুদ্ধ’ করেছিলেন এলাকার তৃণমূল কর্মীরা।
প্রসঙ্গত, পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক হিসাবে এই অফিস থেকেই যাবতীয় কাজকর্ম পরিচালনা করতেন জিতেন। তাই তিনি বিজেপিতে যোগ দিতেই সেই অফিসের দখল নিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। ওই বিধায়ক কার্যালয়কে রাতারাতি তৃণমূলের পার্টি অফিসে পরিণত করা হয়েছে। এদিকে, জিতেন আপাতত সপরিবার কলকাতায় রয়েছেন। সম্ভবত প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পরেই তিনি এলাকায় ফিরবেন। তবে তিনি ফেরার আগেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে আসানসোলে। সেখানকার অন্যতম ব্যস্ত সিটি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জিতেনের কাটআউট বানিয়ে তাতে জুতোর মালা পরিয়েছেন পরিবহণ শ্রমিকরা। জিতেনের কুশপুতুলও দাহ করা হয়েছে বুধবার।
এ নিয়ে পরিবহণ শ্রমিকনেতা রাজু আলুওয়ালিয়া বলেছেন, ‘বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন জিতেন। তাই পরিবহণ শ্রমিকরা তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন।’ জিতেন তাঁদের দল ছেড়ে চলে গেলেও সেই ঘটনার রাজনৈতিক প্রভাব খুব বেশি পড়বে না বলেই মনে করেন পাণ্ডবেশ্বরের স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলার মুখপাত্র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘এটা তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এতে দলের লাভ-ক্ষতির হিসেব করার মতো ক্ষমতা আমার নেই।’