হাতে আর বেশিদিন বাকি নেই। চলতি মাসেই শুরু হচ্ছে বাংলার বিধানসভা নির্বাচন। আর তাই একুশের ভোটযুদ্ধ শুরুর মুখে বদলাচ্ছে রণনীতি। দলবদল থেকে ভোটব্যাঙ্ক, বিজেপি, বাম-কংগ্রেস জোটের রাজনীতির মাঝেই এবার কৌশলে বদল আনল তৃণমূল। এবার ‘বাংলার মেয়ে’কে নিয়েই ছক সাজাল মমতা শিবির। ধর্ম-বর্ণ-জাতপাত নয়, বাংলার নারীশক্তিকেই সামনে রেখে এগাচ্ছে তারা।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এলেন, মহিলা হিসেবে জনপ্রিয়তা তখনও তুঙ্গে ছিল, এখনও রয়েছে। যদিও এই বিষয়টিকে এর আগে কখনও গুরুত্ব দিয়ে দেখা না হলেও একুশের রণনীতিতে কিন্তু অন্যতম ভূমিকা নিতে চলেছে ‘মহিলারাই’। সম্প্রতি তৃণমূল যে স্লোগান ঘোষণা করেছে তা হল, ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’। বিজেপি যে ‘দুর্গা ও সীতার’ অবমাননা করেছে, তা নিয়েও বাংলার মা-বোনেদের মনস্তত্ত্বে ছাপ ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে তৃণমূলের তরফে। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব জানাচ্ছে মহিলা ভোটাররাই কিন্তু এবারের রণনীতির মূল ঘুঁটি হতে পারে।
এদিকে, বিজেপি যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তায় রাশ টানতে একাধিক পন্থা অবলম্বন করছে, তেমনই তৃণমূল নেত্রী নিজেকে ‘বাংলার মেয়ে’ প্রতিষ্ঠিত করেই নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছেন। সরকারি তথ্য অনুসারে, রাজ্যের ৭.৩২ কোটি ভোটারের মধ্যে ৪৯ শতাংশই মহিলা। বিগত দুটি বিধানসভা নির্বাচনে, ভোটদানের দিনে নারীদের ভোটদানের হার পুরুষদের তুলনায় বেশি ছিল। আর সেই নারীশক্তির জয়গানই গাইছেন মমতা। মহিলা আবেগকে ধরেই তিনি আক্রমণাত্মক সুরে বলেছেন, ‘আমাদের মা-বোনেরা কয়লা চোর?’
দলনেত্রীর পথে হেঁটেছেন দলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। গত সপ্তাহে জলপাইগুড়িতে এক সমাবেশে অভিষেক বলেন, ‘যারা মা দুর্গার প্রতিপন্ন হন, মহিলাদের অপমান করেন, যাদের রাজ্যে উন্নাও ও হাথরাসের মতো ঘৃণ্য ঘটনা ঘটে থাকে, আপনারা কি তাদের বাংলায় আনতে চান? আমরা বাঙালিরা শুনিনি জয় শ্রী রাম, আমরা শুনেছি জয় সিয়া রাম। তারা বলে জয় শ্রী রাম। মানে সীতা নেই। তাদের রাজ্যে নারীরা শোষিত, প্রান্তিক এবং হুমকির মুখোমুখি হন।’