ভোটের লড়াইয়ের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে বাংলায়। সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। এবার বিজেপিকে জোর কটাক্ষ করলেন তৃণমূল নেতা তথা অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী। “বিজেপির নেতারা বাংলায় আসছেন অথচ বাংলার মাটি গায়ে মাখছেন না। পদযাত্রা করছেন না, করছেন রথযাত্রা। নিজেদের ভগবান জগন্নাথদেব ভাবছেন।” বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের আরএসএ ময়দানে তৃণমূলের জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে এই কড়া ভাষাতেই তোপ দেগেছেন যুব তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি তথা অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী। এরপরেই তিনি কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ ছবির সংলাপ টেনে বিজেপিকে খানখান করার বার্তা দিলেন।
গেরুয়া শিবিরের রথযাত্রাকে আক্রমণ শানিয়ে সোহম চক্রবর্তী বলেছেন, “রথের দড়ি দিয়ে বাংলা ভাগের চেষ্টা হচ্ছে। আপনারা সেই রথের দড়ি তাঁদের হাতে তুলে দিন, তবে স্লোগান থাকবে একটাই, দড়ি ধরে মারো টান বিজেপি হবে খান খান। আপনারা সেই রথের চাকা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিন।” এখানেই শেষ নয়, এদিনের সভা থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি অভিনেতা সোহম। বলেছেন, “যে গাছের তলায় বড় হলেন, সেই গাছ কাটারই চেষ্টা করছেন? জেনে রাখুন পৃথিবীতে একটাই লোহা, তাঁকে যত পোড়াবেন, তাতাবেন, তিনি আরও শক্তিশালী হবেন। কোনও কুড়ুল, কাটারির কাটার ক্ষমতা নেই।”
এরপর অভিনেতা সোহম বলেছেন, “সিবিআই জুজু দেখিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা আসলে বিজেপির তোতাপাখি। তা নাহলে তদন্তের আগে বিভিন্ন কাগজপত্র শুভেন্দু অধিকারীর মত নেতাদের হাতে আসে কী করে?” এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে সোহম বলেছেন, “এই বাংলার একজনই অভিভাবিকা। যাঁর ১০ হাত নেই, তবে পাশে ১০ কোটি মানুষ আছে। বাংলা থেকে বিজেপিকে উপড়ে ফেললে দেশেও তাঁদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।”
এদিন জনসভায় উপস্থিত হয়ে রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, “সিপিএম, বিজেপির হাত শক্ত করতে নন্দীগ্রামে ফুরফুরা শরীফের দলকে প্রার্থী করতে চাইছে। যাতে সংখ্যালঘু ভোটকে ভাগ করা যায়। কিন্তু তা হবে না। আমি বলে যাচ্ছি নন্দীগ্রাম থেকে জিতেই তৃতীয় বারের জন্যে মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর জামানত জব্দ হবে শুভেন্দু অধিকারীর।” পাশাপাশি, মুকুল রায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়রা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে গদ্দারী করেছেন বলেও তোপ দেগেছেন কুণাল ঘোষ।
পাশাপাশি, এদিনের ভোট প্রচারে উপস্থিত ছিলেন রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি, পটাশপুরের বিধায়ক জ্যোতির্ময় কর, রামনগর-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি নিতাইচরণ সার, জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি, জেলা তৃণমূলের কো অর্ডিনেটর মামুদ হোসেন প্রমুখ। পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি সহ নানা ইস্যুতে জনসভার ডাক দিয়েছিল ব্লক তৃণমূল ও তৃণমূল যুব কংগ্রেস। এদিন কাঁথির কংগ্রেস নেত্রী রিনা দাস তাঁর অনুগামীদের নিয়ে জোড়াফুলে যোগ দেন। তাঁদের হাতে পতাকা তুলে দিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে।