বিতর্কময় হয়ে রইল আহমেদাবাদে ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিন। বিতর্ক শুরু হয়েছিল নরেন্দ্র মোদীর নামে স্টেডিয়ামের নামকরণের মধ্য দিয়ে। তা শেষ হল রোহিত শর্মার স্টাম্পিং নিয়ে বিতর্ক দিয়ে। মোতেরায় দিনরাতের টেস্টের প্রথমদিন এ ভাবেই বিভিন্ন কারণে ঘটনাবহুল হয়ে থাকল। সেখানে তৃতীয় আম্পায়ারকে নিয়ে ইংরেজদের ক্ষোভ যেমন রয়েছে, তেমনই বেন স্টোকসের বলে থুতু লাগানোর ঘটনাও অংশ নিয়েছে বিতর্কে। বুধবার ম্যাচ শুরুর আগে বেলার দিকেই স্টেডিয়ামে চলে এসেছিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং তাঁর ছেলে তথা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব জয় শাহ। রাষ্ট্রপতি উদ্বোধন করার পরেই দেখা যায়, সর্দার বল্লভভাই পটেলের থেকে স্টেডিয়ামের নাম বদলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামে করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক তরজা। রাজনৈতিক নেতা থেকে নেটাগরিকদের একাংশ এমন সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা শুরু করেন। এর পরে মাঠের বিভিন্ন ঘটনাও উঠে আসে আলোচনায়। গোধূলিলগ্নে হঠাৎই নিভে যায় স্টেডিয়ামের কিছু আলো। বাধ্য হয়ে কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ রাখেন আম্পায়াররা।
ইংল্যান্ডকে কোহলিরা ১১২ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পর ভারতের ইনিংসের প্রারম্ভেই ফের শুরু হয় বিতর্ক। শুভমন গিলের ক্যাচ ধরার চেষ্টা করেছিলেন বেন স্টোকস। তবে ক্যামেরায় পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল বল মাটিতে ঠেকেছে। তা সত্ত্বেও আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইংল্যান্ড। ইংরেজদের এমন আচরণ দেখে অবাক হয়ে যান ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ থেকে নেটাগরিকরা। তুলোধনা করতেও ছাড়েননি অনেকে। ভারতের প্রথম ইনিংসের শুরুর দিকের ঘটনা ছিল এটি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে খোঁচা দেন শুভমন। সামনে অনেকটা এগিয়ে স্টোকস সেই ক্যাচ লোফার চেষ্টা করলেও বল মাটিতে ঠেকে। ক্যামেরায় স্পষ্ট ধরা পড়ে তা। বেশিক্ষণ সময় নষ্ট না করে তৃতীয় আম্পায়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। এতেই ক্ষোভ দেখা দেয় ইংল্যান্ড শিবিরে। তাঁদের দাবি, বড্ড দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃতীয় আম্পায়ার। হতাশায় মাথা নাড়তে থাকেন স্টোকস। জো রুটকে দীর্ঘক্ষণ মাঠে থাকা আম্পায়ার অনিল চৌধুরির সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। ওভার শেষের পর ব্রডও অনেকক্ষণ কথা বলেন। সাজঘরে থাকা কোহলিও যেখানে ইংল্যান্ডের রিভিউ চাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, সেখানে ইংরেজদের এমন আচরণে অবাক ও বিরক্ত নেটাগরিকরা। ধারাভাষ্য দিতে থাকা সুনীল গাওস্কর বলেছেন, “বল যে মাটিতে পড়েছে, তার স্পষ্ট প্রমাণ তো রয়েইছে।”
এর কিছুক্ষণ পরেই ফের বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসেন বেন স্টোকস। দ্বাদশ ওভারে আচমকাই বলে থুতু লাগিয়ে বসেন, করোনাবিধি অনুযায়ী যা ঘোরতর নিষিদ্ধ। সঙ্গে সঙ্গে আম্পায়ার নীতিন মেনন তাঁকে ডেকে সতর্ক করে দেন। তড়িঘড়ি বল জীবাণুমুক্ত করা হয়। এরপর বিতর্ক হয় রোহিত শর্মাকে নিয়ে। তাঁর একটি স্টাম্পিং নিয়ে আবেদন করেছিলেন ইংরেজ ক্রিকেটাররা। তবে তৃতীয় আম্পায়ার রোহিতকে নট আউট ঘোষণা করেন। বেন ফোকস-সহ বাকিরা অবাক হয়ে যান। তবে রিপ্লে-তে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে রোহিতের পা ক্রিজের ভেতরেই ছিল। আগের মতোই তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত জানান তৃতীয় আম্পায়ার। অসন্তুষ্ট হয় ইংরেজরা। তাঁদের এহেন আচরণে স্বাভাবিকভাবেই নিন্দার মুখে।