মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দুয়ারে সরকারের প্রকল্পগুলির মধ্যে রাজ্যে সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছে। ভোটের আগে এই প্রকল্প নিয়ে এসে তৃণমূল সুপ্রিমো মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছেন বলেই রাজনৈতিক মহলের মত। এই কার্ড নিয়ে বিরোধী দলের নেতারা সমালোচনা করলেও তাঁদের পরিবারের লোকজনকেও এই কার্ড করাতে দেখা গিয়েছে। এমনকী সমস্ত রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকরাও চিকিৎসা করাতে গিয়ে এই কার্ডের সুবিধা পাচ্ছেন।
এবার ভিনরাজ্যেও মিলল রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা। ভেলোরের সিএমসি হাসপাতালে বিনামূল্যে ব্রেন টিউমারের সফল অস্ত্রোপচার হল দুর্গাপুরের বাসিন্দা মিতা চৌধুরীর। তিনি সুস্থ হয়ে ওঠায় পরিবারের লোকজন স্থানীয় তৃণমূল নেতাকে ফোন করে রাজ্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি, সরকারের এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে যারা প্রচার করছেন, বিভিন্ন মন্তব্যও করছেন, তাঁদের উদ্দেশ্যে সচেতন হওয়ার বার্তা দিয়েছেন মিতাদেবীর স্বামী সুশান্ত চৌধুরী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুশান্তবাবু দুর্গাপুরের বাসিন্দা। তিনি পেশায় ইলেক্ট্রিশিয়ান। পরিবারে বৃদ্ধ অসুস্থ মা ও বাবা এবং এক মেয়ে রয়েছেন। মেয়ে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি কলেজের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্রী। অসুস্থ মা-বাবার চিকিৎসার সঙ্গে মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালাতে নাজেহাল হচ্ছিলেন সুশান্তবাবু। এই পরিস্থিতির মধ্যেই গত বছরের শেষের দিকে তাঁর স্ত্রীর ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের কাছে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু ব্রেন টিউমারের অস্ত্রোপচারের জন্য বিপুল পরিমাণ খরচের প্রয়োজন হয়। তিনি ভেলোরের সিএমসি হাসপাতালে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে অপারেশনে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা খরচের কথা জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু অত টাকা জোগাড় করা তাঁর পক্ষে কোনওভাবেই সম্ভব ছিল না। এরপর সুশান্তবাবু স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের বিষয়টি জানতে পারেন। এরপরই গত জানুয়ারি মাসে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার পল্লব নাগের দ্বারস্থ হন তিনি। তাঁর সহযোগিতায় পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের মেয়র পরিষদ সদস্য রাখী তিওয়ারির মাধ্যমে দু’দিনের মধ্যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরি হয়ে যায়। চলতি মাসে ভেলোরে স্ত্রীকে অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে যান সুশান্তবাবু। ১৬ ফ্রেব্রুয়ারি অপারেশন হয়। সেখানে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা মেলায়, অপারেশনে কোনও টাকাই খরচ করতে হয়নি।