বছরদুয়েক আগেই শুরু হয়েছিল ইতিউতি। তা সত্যি হল বুধবার। হুগলির সাহাগঞ্জে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা তুলে নিলিন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি সৌমেন খান। তাঁকে পশ্চিম মেদিনীপুরের কোনও আসনে প্রার্থী করা হতে পারে বলে জানিয়েছে তৃণমূলের একটি সূত্র। সৌমেন বলেন, ‘‘বাংলার উন্নয়নের কর্মকাণ্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে কাজ করছেন তাতে সামিল হতেই তৃণমূলে আসা। রাজ্যে যে ভাবে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি চলছে তার থেকে মুক্ত করতে তৃণমূল নেত্রীর হাত শক্ত করতে হবে।’’ প্রদেশ কংগ্রেসের বর্তমান কর্তারা তাঁকে প্রাপ্য সম্মান দেননি বলেও জানিয়েছেন সৌমেন।
এদিন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘সৌমেনকে স্বাগত জানাচ্ছি। অত্যন্ত ভালো কাজ করেছে তৃণমূলে যোগদান করে। ও সচেতন রাজনীতিবিদ। তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় আরও ভালো ভাবে দলের কাজ করবে।” প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মেদিনীপুর শহরের রাস্তায় দেখা গিয়েছিল একটি ফ্লেক্স। সৌমেনের ছবি দেওয়া সেই ফ্লেক্সে তাঁকে তৃণমূলে স্বাগত জানানো হয়েছিল। যদিও সে সময় সৌমেন জানিয়েছিলেন, ওই ফ্লেস্কের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই।
উল্লেখ্য, প্রদেশ কংগ্রেসের সদস্য সৌমেন দীর্ঘদিন মেদিনীপুর পুরসভার কাউন্সিলর ছিলেন। মেদিনীপুর শহরের জগন্নাথ মন্দির এলাকায় বাসিন্দা নব্বইয়ের দশকের গোড়া থেকেই সক্রিয় ভাবে কংগ্রেস রাজীনীতিতে ছিলেন। বাবা ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা ছাত্র পরিষদের সভাপতি ছিলেন সৌমেন। ২০০৬ সালে গড়বেতা বিধানসভা কেন্দ্র কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। এছাড়াও কংগ্রেসের মেদিনীপুর শহর সভাপতি এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। অধীর চৌধুরী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার সৌমেনকে সরিয়ে জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রবীণ কংগ্রেস নেতা সমীর রায়কে। তারপর থেকেই দলের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছিল বলে খবর। দলের বিভিন্ন কর্মসূচী আলাদা ভাবে পালন করতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। বুধবার হুগলিতে একঝাঁক চলচ্চিত্র জগতের কলাকুশলীদের সাথেই তৃণমূলে যোগদান করেন সৌমেন।