মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের শাসনকালে যে আদিবাসী সমাজের সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে, সে কথা একবাক্যেই মেনে নেন তাঁরা। তবে বিজেপি ক্ষমতায় এলে সমাজ ও ধর্মচ্যুত হতে পারেন। শুধু তাই নয়। সারনা ধর্মের নিজস্বতা থেকে বের করে এনে হিন্দুদের আচার-আচরণের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আদিবাসী মোড়লরা। তাই লোকসভা ভোটে যাঁরা পদ্মফুলের বোতাম টিপেছিলেন, তাঁরাও এখন আক্ষেপ করে নিজেদের ভুল শুধরে নিতে চাইছেন। অন্যদিকে, আদিবাসীদের আরও কাছে টানতে ইতিমধ্যেই পূর্ব বর্ধমানে প্রচারে ঝাঁপাচ্ছে ঘাসফুল শিবির। আদিবাসী গরিব পাড়াতেও একাধিক কর্মসূচী করছে তারা।
জেলার ন’টি ব্লকে আদিবাসীদের প্রাধান্য বেশি। সেখানে প্রথম পর্যায়ের প্রচার সেরে ফেলেছে ঘাসফুল শিবির। আদিবাসী সমাজের মোড়লরাও পাড়ায় পাড়ায় জনসংযোগ করছেন, যাতে নিজেদের সুরক্ষিত করা যায়। সেখানে প্রচার করা হচ্ছে, বাম জামানায় আদিবাসীদের শুধু ভোটের যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে এসেছে সিপিএম। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্ব বেড়েছে প্রশাসনে। আদিবাসী নেতাদের সামনের সারিতে আনছে শাসক দল। ক্ষমতা ও সম্মান পেয়েও লোকসভা ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে ছিল না আদিবাসীদের একাংশ। এবার সেই ভুল শুধরে ঘাসফুলের সঙ্গে থাকতে চাইছে আদিবাসী সমাজের একাংশ।
প্রসঙ্গত, লোকসভায় তৃণমূলের সব থেকে খারাপ ফল হয়েছিল আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে। রাজ্যের ৩০ শতাংশ আদিবাসী ভোট বিজেপির দিকে চলে যায়। তবে লোকসভার পর বিজেপির স্বরূপ দেখে আদিবাসীদের একাংশ বলছেন, আমরা দিদির সঙ্গেই আছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের যে সম্মান দিয়েছেন অন্য কেউ দেয়নি। আমাদের জাহের থান করার জন্য পাট্টা দিয়েছে, মাঝিবাবাদের ভাতা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের আর না খেয়ে থাকতে হয় না। এলাকার পাশাপাশি সামাজিক পরিকাঠামোর অনেক উন্নতি হয়েছে। তৃণমূলের এসটি সেলের রাজ্য সভাপতি দেবু টুডু বলেন, আদিবাসীরা তাঁদের নিজস্ব ধর্ম বাঁচাতে চিন্তিত। বিজেপি ক্ষমতায় এলে তাঁরা নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারবেন না। তাই ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই চাইছেন বৃহত্তর আদিবাসী সমাজ।