যে কায়দায় দেশে জিএসটি চালু করেছে মোদী সরকার, তা ব্যবসায় বড়সড় সঙ্কট ডেকে এনেছে। এই অভিযোগ একাধিকবার উঠেছে। তাড়াহুড়োয় কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই জিএসটি কার্যকর করায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু কোনও অভিযোগ-প্রতিবাদই কানে তোলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা তাঁর সরকারের কর্তারা। এবার মুখ্যমন্ত্রীর সেই অভিযোগকেই সিলমোহর দিলেন ছোট-বড় মিলিয়ে দেশের প্রায় সব ব্যবসায়ী। কারণ, ব্যবসায়ীদের অন্যতম দু’টি সর্বভারতীয় সংগঠন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। এর মধ্যে একটি সংগঠনের অভিযোগ, জিএসটি চালু হওয়ার পর মোট ৯৫০ বার তার আইন বা নিয়মের সংশোধন করেছে কেন্দ্র! যার প্রভাব পড়েছে ব্যবসায়।
মুখ্যমন্ত্রী প্রায়শই অভিযোগ করেন, নরেন্দ্র মোদীর যে সিদ্ধান্তগুলি আর্থিকভাবে দেশকে অনেক পিছিয়ে দিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম নোটবন্দী এবং জিএসটি। তাঁর কথার রেশ ধরেই মুখ খুলেছেন কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের সেক্রেটারি জেনারেল প্রবীণ খান্ডেলওয়াল। তিনি বলেন, জিএসটি চালু হওয়ার সময় আমরা সবাই উৎসাহিত হয়েছিলাম। কারণ, সরকার এমন একটা কর কাঠামো তৈরির দিকে এগচ্ছিল, যা ব্যবসায়ীদের পক্ষে সুবিধাজনক বলেই মনে হয়েছিল। কিন্তু গত ২০১৭ সালের জুলাই মাসে জিএসটি কার্যকর হওয়ার পর এই সাড়ে তিন বছরে ছোট-বড় সংশোধনী মিলিয়ে মোট ৯৫০টি পরিবর্তন আনা হয়েছে এতে। এই একটি তথ্যেই প্রমাণ হয়, গোটা ব্যবস্থাটি চালু করতে কতটা দায়সারা মনোভাব ছিল কেন্দ্রের। জিএসটি কাউন্সিলের যদি আত্মবিশ্বাসের এতই অভাব হয়, তাহলে দেশের কোটি কোটি ট্রেডার কীভাবে ব্যবসা করবেন? প্রশ্ন প্রবীণের।
একই অভিযোগ নিয়ে এবার রাস্তায় নেমেছে ব্যবসায়ীদের অপর একটি সর্বভারতীয় সংগঠন ফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ব্যাপার মণ্ডল। কেন্দ্রকে বারবার জিএসটি নিয়ে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি, এমনটাই বলছেন এখানকার কর্তারা। তাই তাঁরা এবার জেলাস্তরে আন্দোলন শুরু করেছেন। দেশের ৪০০ জেলায় জেলাশাসকদের এই বিষয়ে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে। এই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট জয়েন্দ্র তান্না বলেন, এই কর ব্যবস্থায় সৎ ব্যবসায়ীরাও কোপের মুখে পড়ছেন। কারণ, তাঁদের ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট পেতে কালঘাম ছুটছে। মূলধন আটকে থাকছে সরকারের ঘরে। অন্যদিকে, অসাধুদের কর ফাঁকির পাহাড় জমছে। সবটা নিয়ে নাজেহাল কেন্দ্র। আমাদের দাবি, সরকার আমূল বদলে ফেলুক জিএসটি আইন।