মোদী সরকারের ‘সর্বনাশা’ কৃষি আইন নিয়ে যথেষ্টই ব্যাকফুটে পদ্মশিবির। পড়শি রাজ্য পাঞ্জাবের পুরভোটে কার্যত ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে বিজেপি। ফলে রক্তচাপ বেড়েছে হরিয়ানার বিজেপি কর্মীদের। এমতাবস্থায় কৃষকদের আন্দোলনের পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে ‘ভাঁওতা’ দেওয়ার রাস্তায় হাঁটার সিদ্ধান্ত নিলেন জাঠ রাজ্যের পদ্ম শিবিরের কর্মীরা। এক অনুষ্ঠানে সরাসরিই দলীয় নেতা-মন্ত্রীদের কাছে কৃষকদের কীভাবে ‘ভাঁওতা’ দেওয়া যায়, সেই মন্ত্র জানতে চাইলেন।
সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এদিন গুরুগ্রামে বিজেপির এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ছিল। বৈঠকে হাজির ছিলেন হরিয়ানার বিজেপি সভাপতি ওপি ধনকর, ক্রীড়ামন্ত্রী সন্দীপ সিং, হিসারের বিজেপি সাংসদ ব্রিজেন্দ্র সিং সহ পদ্ম শিবিরের শীর্ষ নেতারা। বৈঠকে কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলনের মোকাবিলা কীভাবে করা যাবে তা নিয়ে আলোচনা হয়। ওই আলোচনার মাঝেই বিজেপির একাধিক কর্মী মঞ্চে বসে থাকা নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘কৃষকরা কৃষি আইন মেনে নেওয়ার মেজাজে (মুডে) নেই। কৃষি আইনের পক্ষে আমাদের সওয়াল শুনতে কিছুতেই রাজি হচ্ছেন না। তাঁদের নিরস্ত করার জন্য ভুলপথে নিয়ে যেতে হবে। তাই কৃষকদের কীভাবে ‘ভাঁওতা’ দেওয়া যায় তার কিছু টিপস দিন।’
দলের নিচুতলার কর্মীদের মুখ থেকে এমন কথা শুনে বিড়ম্বনায় পড়ে যান মঞ্চে থাকা বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরা। এ বিষয়ে পরে আলোচনা করা হবে বলে অস্বস্তিকর বিষয়টি তখনকার মতো ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু ততক্ষণে গুণধর বিজেপি কর্মীদের কৃষকদের ‘ভাঁওতা’ দেওয়ার মন্ত্র জানতে চাওয়ার বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায়। আর ভাইরালের সঙ্গে সঙ্গেই সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে।
বিজেপি কর্মীদের ওই নির্লজ্জ রাজনীতির ভিডিও ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পদ্ম শিবিরের কর্মীদের এমন ভূমিকার নিন্দায় মুখর হয়েছেন নেটিজেনরা। হাতে নতুন অস্ত্র পেয়ে প্রধান প্রতিপক্ষ দলকে বিঁধতে আসরে নেমেছে কংগ্রেসও। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা ওই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া টুইটারে পোস্ট করে লিখেছেন, ‘অন্নদাতা ও দেশের প্রতি বিজেপির আসল চেহারা এটাই। জলে ডুব মরা উচিত বিজেপি নেতাদের।’ ভিডিওটি নিয়ে হরিয়ানার বিজেপি নেতারা এতটাই বিড়ম্বনায় পড়েছেন যে সংবাদমাধ্যমের কাছে কেউই প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি।