গত কয়েক মাসে ভারতে পেট্রোল-ডিজেলের মত জ্বালানি রীতিমত অগ্নিমূল্য। কোথাও কোথাও এর দাম ১০০ টাকা ছুঁইছুঁই। যা নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সারা রাজ্যের মতো প্রতিদিন আন্দোলন চলছে বাংলার শিলিগুড়িতেও। এই পরিস্থিতিতে খোলা নেপাল সীমান্ত দিয়ে সে-দেশ থেকে কম দামের পেট্রোল-ডিজেল চোরাপথে এ পারে ঢুকে পড়ছে। অন্তত ১০-১৫ টাকা লিটার প্রতি কম দামে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় নীরবে নিভৃতে বিকোচ্ছে এই মহার্ঘ্য জ্বালানি।
পুলিশ সূত্রের খবর, কোনও ক্যান বা জারিকেনে নয়, অভিনব কায়দায় বাইক ও গাড়িতে নেপাল থেকে তেল ঢুকছে এ-পারে। খোলা সীমান্তের ও-পারে গিয়ে ট্যাঙ্ক ভর্তি করে পানিট্যাঙ্কি সীমান্তের এ-পারে তেল আসছে। তার পরে ট্যাঙ্ক থেকে তেল বার করে চোরাবাজারে বিক্রি হচ্ছে। নেপালে পেট্রোলের দাম ভারতীয় মুদ্রায় ৬৮-৭০ টাকা এবং ডিজেল ৫৬-৫৮ টাকা প্রতি লিটারে মিলছে। সেখানে এদেশে শিলিগুড়ি সহ মোটামুটি গোটা উত্তরবঙ্গে ৯৪ টাকা লিটার পেট্রোল এবং ৮৭ টাকা লিটার ডিজেল পাম্পে বিক্রি হচ্ছে।
নেপাল থেকে চোরাই তেল এ-পারে আসার খবর পৌঁছে গিয়েছে সীমান্তে মোতায়েন সশস্ত্র সীমা বলের (এসএসবি) সদর দফতরগুলির কাছেও। গত সপ্তাহেই বিহারের আরারিয়া এবং কিষানগঞ্জের দিক থেকে লুকিয়ে নেপালের তেল ঢোকার খবর মেলে। তার পরে পানিট্যাঙ্কি, গলগলিয়া সীমান্তেও তাই হচ্ছে বলে অভিযোগ মিলেছে। ইতিমধ্যে এসএসবি ডিজি দফতর-সহ সমস্ত সেক্টর দফতর থেকে সীমান্তে অতিরিক্ত নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবার ভোটের জন্য এই অঞ্চলে আধা সেনা হিসেবে অনেক জায়গায় এসএসবি মোতায়েন হচ্ছে, তাই সীমান্তে যাতে কোনওভাবে নজরদারিতে সমস্যা না হয় সেই খেয়াল রাখা হচ্ছে।
এসএসবি-র এক মুখপাত্রের কথায়, নেপাল থেকে ভারতে চোরাপথের কারবার নিয়ে একাংশ বরাবর সক্রিয়। সেইমতো নজর রাখা হচ্ছে। পেট্রোল, ডিজেলের দাম বাড়তেই তেল আসছে বলে শোনা যাচ্ছে। সুকৌশলে কিছু কারবার চলছে বলেও খবর আসছে। এসএসবি এবং পুলিশ সূত্রের খবর, এ রাজ্যের সঙ্গে নেপালের সীমান্ত রয়েছে ১০০ কিলোমিটারের মতো। বিহার ও সিকিমের নেপাল সীমান্ত রয়েছে। ১৯৫০ সালের ভারত-নেপাল চুক্তির জন্য এ সীমান্ত বরাবর উন্মুক্ত। কোথাও কাঁটাতারের বেড়া নেই। এই সুযোগে বরাবর চোরাকারবারীরা নেপাল সীমান্তে সক্রিয় থাকে।