কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের প্রতিবাদ এখনও অব্যাহত। প্রাণ হারিয়েছেন আন্দোলনরত একাধিক কৃষক। কেউ কেউ আত্মহননের পথও বেছে নিয়েছেন। এবার আরেক হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষী থাচল অমৃতসর। “বিদায়, আমার সময় শেষ হয়েছে”, ভাষণ শেষ করার মুহূর্তে মঞ্চে দাঁড়িয়ে কথাগুলি বলছিলেন কৃষক নেতা দাতার সিংহ। ভাষণ শেষ হওয়ার পরে পোডিয়াম থেকে নেমে নিজের আসনে ফিরতে গিয়েই আচমকা মঞ্চে লুটিয়ে পড়লেন পরিচিত কৃষক নেতা। তড়িঘড়ি দাতার সিংহকে নিয়ে যাওয়া হল হাসপাতালে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। সবাইকে বিদায় জানিয়ে চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছেন তিনি। আর এমন ঘটনায় কার্যত শোকবিহ্বল হয়ে পড়েছেন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী কৃষকরা। এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
উল্লেখ্য, মোদী সরকারের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব ছিলেন পঞ্জাবের কীর্তি কিষাণ ইউনিয়নের নেতা দাতার সিংহ। দিল্লীর সিঙ্ঘু সীমান্তে কৃষি আইন বিরোধী লাগাতার ধর্নাতেও সহযোগীদের নিয়ে অংশ নিয়েছিলেন। বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী উজ্জ্বল সিংয়ের স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ধর্না মঞ্চ থেকে তিনদিন আগেই বাড়ি ফিরেছিলেন। সোমবার অমৃতসরের বিরসা বিহারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যখন যোগ দিয়েছিলেন তখনও প্রাণবন্ত ছিলেন। পরিচিতদের সঙ্গে হেসেই কথা বলছিলেন।
প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী উজ্জ্বল সিংয়ের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ জানাতে গিয়ে নয়া কৃষি আইনের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, “প্রাণ থাকতে আন্দোলন থেকে পিছু হঠব না। মোদী সরকার যতদিন পর্যন্ত না কৃষি আইন প্রত্যাহার করছে ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।” ভাষণ শেষ করার সময়ে কিছুটা রসিকতার ছলেই বিশিষ্ট কৃষক নেতা বলেন, “বিদায়। আমার সময় শেষ।”
তখনও কেউ ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেননি, রসিকতার ছলে বলা কথাগুলিই কয়েক সেকেন্ড পড়ে সত্যি হয়ে দাঁড়াবে। ভাষণ শেষ করে নিজের আসনে যেতে গিয়েই বুকে ব্যথা অনুভব করেন তিনি। বুকে হাত দিয়ে বসে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মৃত্যুর দেশে পাড়ি দিয়েছেন বর্ষীয়ান কৃষক নেতা দাতার সিংহ।