অবসরগ্রহণের আগেই চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। রাজ্যের প্রাক্তন পুলিশ কর্তা হুমায়ুন কবীর এ বার ‘দিদির দূত’ কর্মসূচীর প্রচারে সামিল হলেন। প্রাক্তন আইপিএস অফিসার হুমায়ুনের আদি বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরায়। শুক্রবার সেখানে দলের কর্মসূচীতে যোগ দেন তিনি। দলের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকও করেন। হুমায়ুন বলেন, ‘‘এখানে তৃণমূলের পার্টি কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে এসেছি। কী সমস্যা আছে, কেন সমস্যা আছে, তা জানার চেষ্টা করছি। সেই সব সমস্যার সমাধান করাই আমাদের উদ্দেশ্য। এখানে যা হয়েছিল তা অতীত। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে, অভিজ্ঞতা লাভ করে আমাদের এগোতে হবে। যে উদ্যম নিয়ে ২০১১ সালে মানুষ মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তার থেকেও বেশি জোশ নিয়ে এবারে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’’
পাশাপাশি বিজেপিকে কটাক্ষ করে হুমায়ুন বলেন, ‘‘অনেক বেশি খারাপ একটা দল রাজ্য দখল নিতে চাইছে। টাকাপয়সা ছড়িয়ে, কুৎসা রটিয়ে কিছু করার চেষ্টা করছে। তার প্রতিরোধ করতে চাই আমরা। নিশ্চিত ভাবেই আমরা সফল হব।’’ চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার পর গত ৯ই ফেব্রুয়ারি কালনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন হুমায়ুন। ডেবয়ার তাঁর প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে। হুমায়ুন সেই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ডেবরা থেকে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ রটনা। কোনও স্তরে এমন আলোচনা হয়নি। ‘দিদির দূত’ হিসেবে কাজ করছি। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে তা মেনে চলব। দল যে ভাবে কাজ করতে বলবে, সেই ভাবে কাজ করব।’’
প্রসঙ্গত, শুক্রবার প্রথমে ডেবরা ব্লকে একটি গেস্ট হাউসে ব্লক তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন হুমায়ুন। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, এলাকায় যা সমস্যা রয়েছে তা মেটানোর জন্য তিনি এসেছেন। হুমায়ুনের স্ত্রী অনিন্দিতা আগেই যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। দক্ষ পুলিশ আধিকারিক বলে পরিচিত হুমায়ুনের লেখা কিছু বইও আছে। সারাদিনের কর্মসূচী নিয়ে নিজের জন্মভূমিতে এসে শুক্রবার বালিচক অডিটোরিয়ামে দলের ছাত্র যুব সংগঠনের নেতা কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। ডেবরার ‘পথ সাথী’তে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে আবার বালিচকে বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, চিকিৎসকদের সঙ্গেও আলোচনা করেন হুমায়ুন।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের নির্বাচনে ডেবরার বিধায়ক হন রাধাকান্ত মাইতি। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হন সেলিমা বিবি। তিনিও জেতেন। কিন্তু দলের সূত্রে জানা গিয়েছে যে, এখন ডেবরা এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত। এই পরিস্থিতিতে হুমায়ুনকেই এই এলাকায় দল প্রার্থী করতে পারে বলে মনে করছেন ডেবরা এলাকার অনেক তৃণমূল নেতা-কর্মী। দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘দলের কর্মসূচীতে এসেছেন হুমায়ূন। তবে ওই কেন্দ্রে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কে হবেন তা এখন পর্যন্ত ঠিক হয়নি। প্রার্থী কে হবেন তা ঠিক করবেন দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”