প্রায় এক বছর হয়ে গেছে লাদাখ সংঘর্ষের। অবশেষে প্যাংগং হ্রদের দু’ধার থেকেই সেনা সরানোর কাজ শেষ করেছে ভারত এবং চীন। শুক্রবার সরকারি সূত্রের দাবি করা হল এমনটাই। ওই সূত্র এও জানিয়েছে, প্যাংগং হ্রদের থেকে সেনা সরানোর পর লাদাখের দেপসাং, হট স্প্রিং এবং গোগরা অঞ্চলেও সেনা সরানোর কাজ শুরু হবে। এ নিয়ে শনিবার একটি বৈঠকে বসবেন ভারত এবং চীনের সামরিক বাহিনীর শীর্ষকর্তারা। দু’দেশের দশম দফার ওই বৈঠকে সেনা সরানোর প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানানো হয়েছে সূত্রের তরফে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের এপ্রিলে পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা এএসি) বরাবর এলাকায় ভারত-চীন সেনা সংঘর্ষের পর ওই অঞ্চলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য দু’দেশের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। অবশেষে দু’পক্ষই ধীরে ধীরে প্যাংগং হ্রদ এলাকা থেকে সেনা সরাতে শুরু করে। জানুয়ারির শেষ দিকেও ওই এলাকায় চীনের একাধিক সেনা ছাউনি ছিল। তবে তা পুরোপুরি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ভারত-চীন, দু’পক্ষের তরফেই ওই অঞ্চলে মোতায়েন সেনা জওয়ান, ট্যাঙ্ক-সহ অন্যান্য সামরিক অস্ত্রশস্ত্রও সরিয়ে নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্যাংগং হ্রদের দু’ধার থেকে ভারত-চীনের সেনা সরানোর বিষয়টি সম্প্রতি রাজ্যসভায় জানিয়েছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তিনি আরও বলেছিলেন, লাদাখ সীমান্তে দু’দেশের মধ্যে অচলাবস্থা কাটাতে ধীরে ধীরে সেনা সরানো হবে। এ বিষয়ে ভারত-চীন, দু’পক্ষই রাজি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছিলেন রাজনাথ। গোটা বিষয়ে সমন্বয় সাধন করে এবং পরিস্থিতি যাচাই করেই সেনা সরানোর কাজ করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। এর পর লাদাখ নিয়ে অচলাবস্থা কাটানোর জন্য আলোচনা শুরু হবে দু’দেশের সামরিক কর্তাদের মধ্যেও।
গত বছরের এপ্রিলে লাদাখ-সংঘর্ষের পর জুন মাসে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ে। ১৫ই জুন লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীনা বাহিনীর সঙ্গে সঙ্ঘর্ষে নিহত হন ভারতীয় সেনার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক-সহ ২০ জন। ঘটনাচক্রে, শুক্রবারই চীন স্বীকার করে, ওই সংঘর্ষে তাদের ৫ জন সৈন্য নিহত হয়েছিলেন। এর পর থেকে দফায় দফায় দু’দেশের মধ্যে সামরিক এবং কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা হলেও ফেব্রয়ারির গোড়া পর্যন্ত অচলাবস্থা কাটানোর কোনও সুরাহাসূত্র বার হয়নি। তবে চলতি সপ্তাহের স্যাটেলাইট চিত্রে ধরা পড়েছে, প্যাংগং হ্রদ এলাকা থেকে দু’পক্ষই ধীরে ধীরে সেনা সরানোর কাজ শুরু করেছে। এরপরই সরকারি সূত্র জানাল, এই প্রক্রিয়া সদ্যসমাপ্ত।