‘ওনার বক্তৃতা শুনে আমার গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভোঁদড় বাহাদুরের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।’ শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক থেকে ঠিক এই ভাষাতেই অমিত শাহকে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় এলে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য লাগু হবে সপ্তম বেতন কমিশন। সেইসঙ্গে শিক্ষকদের বঞ্চনা দূর করতে বিশেষ কমিটি বানাবে বিজেপি সরকার। বৃহস্পতিবার নামখানায় বিজেপির পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করতে গিয়ে এমনই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এ নিয়েই শুক্রবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে শাহকে তুলোধনা করেন ব্রাত্য। বলেন, ‘ওনার বক্তৃতা শুনে আমার গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভোঁদড় বাহাদুরের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। যনি অনেক কথা বলতেন, বাড়তি কথা বলতেন কিন্তু সত্যি বলতেন না।’
প্রসঙ্গত, গতকাল নামখানার সমাবেশ থেকে শাহ বলেছিলেন, বাংলায় বিজেপির সরকার এলেই সরকারি কর্মচারীদের জন্য সপ্তম বেতন কমিশন বলবৎ করবেন। সেই সঙ্গে এও বলেন, মৎস্যজীবীদের জন্য কৃষক সম্মান নিধির মতো বছরে ছ’হাজার টাকা দেওয়া, সরকারি চাকরিতে মহিলাদের ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ, গঙ্গাসাগরকে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার মতো ঘোষণা ছিল শাহের বক্তৃতায়। গতকালই গঙ্গাসাগর নিয়ে শাহকে জবাব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, সেখানে কী ছিল আর তাঁর জমানায় কী হয়েছে তা হিসেব করে দেখুক বিজেপি। এদিন বাকি বিষয়গুলি নিয়ে শাহের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান ব্রাত্য।
গুজরাতের বিজেপি সরকারের রিপোর্ট কার্ড হাতে নিয়েই এদিন তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে বসেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘গুজরাত মূল বাজেটের ২ শতাংশ মাত্র বরাদ্দ করে শিক্ষাখাতে। গুজরাতে অনেক শিক্ষক পেনশন পান না। সেখান থেকে লোক এসে রাজ্যের শিক্ষকদের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলছেন।’ ব্রাত্যর তোপ, ‘প্রদীপের নীচে অন্ধকারের সেরা উদাহরণ গুজরাত। মহিলাদের নিয়ে কথা বলেন, সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল আনেন না। বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও বলেন, বাজেটে বরাদ্দ লবডঙ্কা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আয়ুষ্মান ভারতের ২ বছর আগে চালু স্বাস্থ্যসাথী। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে ৪০ শতাংশ টাকা দিতে হয় রাজ্যকে। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে ১০০ শতাংশ টাকা দেয় রাজ্য।’ কৃষক ইস্যুতেও মোদী সরকারকে বিঁধে ব্রাত্য বলেন, ‘কৃষকদের নিয়ে কথা বলছেন, এদিকে ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী এনেছেন আন্দোলন ভাঙতে। বাংলার কৃষকবন্ধু প্রকল্পে সবাই সাহায্য পায়।’